মোদী সরকার যে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল, তাতে ‘চাঁদা’ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে ‘খুশি’ করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে ফার্মা সংস্থাগুলি। ওষুধের দাম বাড়িয়ে যে টাকা তারা তুলেছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। গত ১৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, বন্ড মারফৎ ৩৫টি ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থার অনুদানের পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি টাকা। এরইমধ্যে তাৎপর্যপূর্ণভাবে, গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরে সাতটি ওষুধ সংস্থা বন্ড কিনেছে। আর তারপর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি ঠান্ডা ঘরে চলে গিয়েছে। এরমধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, তেলেঙ্গানার হেটেরো ল্যাবস অ্যান্ড হেটেরো হেল্থকেয়ার ২০২২ সালের এপ্রিলে ৪০ কোটি টাকার বন্ড কেনে। এর আগের দশমাস ধরে এই সংস্থাকে ছ’টি নোটিস পাঠিয়েছিল মহারাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। তারা নোটিস পাঠিয়েছিল গুজরাতের সংস্থা টরেন্ট ফার্মাকেও। সংস্থার ডিপ্ল্যাট-১৫০ গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে ২০১৮ সালে একে ‘নিম্নমানের’ ঘোষণা করা হয়। আর এরপর ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বণ্ড কিনেছে তারা। ২০২১ সালে গুজরাতের জাইডাস হেল্থ কেয়ারের তৈরি রেমডেসিভিরের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিহারের নিয়ামক সংস্থা। এর পরের বছর থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৯ কোটি টাকার বন্ড কেনে জাইডাস।
২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে নিম্ন মানের ওষুধ তৈরির জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছিল গ্লেনমার্ককে। আর ২০২২ সালের নভেম্বরে ৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার বন্ড কেনে কোম্পানি। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে চারটি কারণ দর্শানোর নোটিস পায় সিপলা। ২০১৯ সাল থেকে মোট ৩৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকার নির্বাচনী বন্ড কেনে সিপলা। দেরাদুনের সংস্থা আইপিসিএ-র তৈরি লারিআগোর গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ২০১৮ সালে। আর ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বন্ড কিনেছিল আইপিসিএ। ২০২০-তে ইনটাসের এনাপ্রিল-৫ ট্যাবলেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল মহারাষ্ট্র এফডিএ। আর ২০২২ সালের অক্টোবরে ২০ কোটি টাকার বন্ড কেনে ইনটাস।