সম্প্রতিই উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় প্রবল সমারোহের সঙ্গে উদ্বোধন করা হয়েছে রামমন্দিরের। যা ঘিরে উত্তাল সারা দেশ। পাশাপাশি, সূত্রপাত হয়েছে বিভিন্ন বিতর্কেরও। ‘রামলাল’র প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বিগ্ন পাকিস্তান। এবার তাদের তরফে রাষ্ট্রসংঘকে একটি চিঠি লিখে উদ্বেগ প্রকাশ করা হল। ভারতে অবস্থিত ইসলামিক স্থানগুলির সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার আর্জি জানানো হয়েছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুনির আক্রম বুধবার নিউ ইয়র্কের সংযুক্ত রাষ্ট্র মুখ্য কার্যালয়ে একটি বৈঠকের সময় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই বৈঠক চলছিল ওআইসির সদস্য দেশগুলির মধ্যে। এর আগে পাকিস্তান রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করেছিল। কড়া ভাষায় নিন্দা জানানো হয়েছিল রাম মন্দিরের অনুষ্ঠানকে। বয়ানে পাকিস্তান উল্লেখ করে, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বহু যুগ আগে স্থাপিত পুরনো মসজিদ ধ্বংস করে ফেলেছিল। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের ভারতের সবচেয়ে বড় আদালত বেকসুর খালাস করে। শুধু তাই নয়, সেই স্থানেই অনুমতি দেওয়া হয় রামমন্দির নির্মাণের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মুনীর আক্রম আমেরিকার অ্যালায়েন্স অফ সিভিলাইজেশনের উচ্চ আধিকারিক মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল মোরাটিনোসকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি লিখেছেন। যেখানে উল্লেখ করা হয়, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তলে রাম মন্দির নির্মাণ এবং তার জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের কড়া নিন্দা করছে পাকিস্তান। পড়শি দেশের বক্তব্য, এই কারণে ভারতে মুসলিমদের সামাজিক, আর্থিক এবং রাজনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে শান্তি বিঘ্নিত হবে খুব শীঘ্রই। ভারতে ইসলামিক সৌধ এবং স্থানগুলির সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রসংঘকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে পাকিস্তান। মুনীর আক্রম চিঠিতে লেখেন, “ভারতে মুসলিম ধর্মের স্থানগুলির সুরক্ষা নিয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি। ভারতের ধর্মীয় এবং সামাজিক সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার বিষয়টিতেও নজর দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি।” এখানেই থেমে থাকেননি মুনির। “রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা ভারতে মসজিদগুলিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার একটি প্রয়াস। ধার্মিক সৌজন্যতা নষ্ট হওয়ার ইঙ্গিত। মামলা এখন বাবরি মসজিদে আর সীমাবদ্ধ নেই। ভারতে অবস্থিত অন্য মসজিদগুলির নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। আফসোস এই বাবরি মসজিদ একটিমাত্র ঘটনা নয়। বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদকে অপমান করা হচ্ছে। এগুলিকেও নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হতে পারে, এই আশঙ্কা করছি আমরা”, চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে লেখেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত।
