২০১৬ সালের নভেম্বরে নোটবন্দি করে পুরনো ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নিয়েছিল মোদী সরকার। তারপরেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাজারে আনে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট। তবে তার সাড়ে ছয় বছর হতে না হতেই সেই ২০০০ টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যেখানে মোদীর এই দু’হাজারি নোটের ‘প্রজেক্টে’র জন্য খরচ হয়েছিল প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। সঠিক হিসেবে ১৭ হাজার ৭২০ কোটি। এই হিসেবটা খোদ মোদী সরকারের। সংসদে শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন এই তথ্য জানিয়েছে তারাই। সবচেয়ে বড় কথা, এই খরচের সবটাই দেশবাসীর করের টাকা। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, যদি নোট বাজারে রাখতেই না হয়, তাহলে এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের মানে কী? প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, জাল নোটে বাজার ছেয়ে গিয়েছে বলেই আচমকা নোট বাতিলের পদক্ষেপ। আর তারপরই দু’হাজার টাকা চালুর সিদ্ধান্ত। কিন্তু কালো টাকার সন্ধান মিলেছে কি? নাকি নোট জাল হওয়া বন্ধ হয়েছে?
তৃণমূলের সাংসদ দেব তথা দীপক অধিকারী লোকসভায় এই প্রশ্নটি করেছিলেন। তার উত্তরে অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ‘শুধু দু’হাজার টাকার নোট ছাপতেই খরচ হয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাঙ্ক অব বরোদা, ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার মতো ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে দু’হাজার টাকার নোট সাজাতে (রিক্যালিব্রেট) খরচ হয়েছে ৩২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। ২০২৩ সালের ১৯ মে সিদ্ধান্ত হয় দু’হাজারের নোট বাজার থেকে তোলার। এ পর্যন্ত ৮৯ শতাংশ নোটই ব্যাঙ্কে ফিরে এসেছে। তবে বাজারে এখনও রয়েছে ৯ হাজার ৭৬০ কোটি টাকার দু’হাজারি নোট।’ তৃণমূলেরই আর এক সাংসদ মালা রায় প্রশ্ন করেছিলেন, ‘দেশের রিয়েল এস্টেটে কত কালো টাকা ঘুরছে? সরকার তার জন্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে?’ জবাবে অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘রিয়েল এস্টেট কেন, গোটা দেশে কত পরিমাণ কালো টাকা ঘুরছে, তার কোনও হিসেব সরকারের কাছে নেই।’