মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর একদিকে যেমন ক্রমাগত বিপন্ন হয়েছে জনসাধারণের বাকস্বাধীনতা, তেমনই সংশয়ের সম্মুখীন হয়েছে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা। রাজনৈতিক বিরোধীদের ফোনে উঁকি দেওয়ার প্রবণতা যে বিজেপির দীর্ঘদিনের, প্রায়শই সে অভিযোগ তুলে ধরেন বিরোধীরা। পেগাসাসের স্মৃতি আজও তরতাজা দেশবাসীর মনে। এরই মধ্যে কি ফের বিরোধী সাংসদদের ফোন হ্যাক করে তথ্য চুরি করতে চাইছে মোদী সরকার? তুঙ্গে জল্পনা। ৩০ অক্টোবর রাত পৌনে বারোটার সময়ে বেশ কিছু বিরোধী নেতা ও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন এমন কয়েকজন সাংবাদিক অ্যাপলের থেকে নোটিফিকেশন পান। ‘অ্যালার্ট : স্টেট-স্পনসরড অ্যাটাকার্স মে বি টার্গেটিং ইয়োর আইফোন’ শীর্ষক ইমেলে লেখা হচ্ছে, ‘অ্যাপল বিলিভস ইউ আর বিইং টার্গেটেড বাই স্টেট-স্পন্সরড অ্যাটাকার্স হু আর ট্রাইং টু রিমোটলি কম্প্রোমাইজ দ্য আইফোন অ্যাসোসিয়েটেড উইথ ইয়োর অ্যাপল আইডি’। যা ঘিরেই শুরু শোরগোল।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র, শিবসেনার প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, আম আদমি পার্টির রাঘব চাড্ডা, কংগ্রেসের শশী থারুর, কে সি বেণুগোপাল, রেবন্ত রেড্ডি, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে, রাহুল গান্ধীর অফিসে কাজ করেন এমন বেশ কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য, এআইএমআইএমের আসাদুদ্দিন ওয়াইসি, কংগ্রেস নেতা তথা ছত্তিসগড়ের উপমুখ্যমন্ত্রী টিএস সিংদে, সিপিআইএমের জেনারেল সেক্রেটারি সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা, সমাজবাদী পার্টির প্রেসিডেন্ট অখিলেশ যাদবদের ফোনে এমন নোটিফিকেশন গিয়েছে। সাংবাদিকদের মধ্যে সিদ্ধার্থ বরদরাজন, শ্রীরাম কারি, সমীর সরণ, রেবতী প্রমুখরা এই নোটিফিকেশন পেয়েছেন। সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার কথাও বলা হয়েছে নোটিফিকেশন প্রাপকদের উদ্দেশ্যে। আরও বলা হয়েছে, সাইবার আক্রমণকারীরা আপনাদের টার্গেট করেছে, কারণ আপনার পরিচিতি। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস এই বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে। বিরোধীদের বক্তব্য, মোদী যতই ফোন হ্যাক করুন, তাঁরা প্রশ্ন করবেনই। প্রশ্ন করা কেউ রুখতে পারবে না। বিরোধীদের ফোনে হানা দিয়ে গোপনীয় তথ্য জানার চেষ্টার অভিযোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।