ফের বড়সড় বিতর্কের কেন্দ্রে ‘ডবল ইঞ্জিন’ গুজরাত। খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যেই ঘটল কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি! কোনও কাজ না করেই দু’বছর ধরে ৪ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে কংগ্রেস। পুলিশ জানিয়েছে, গুজরাতের আদিবাসী অধ্যুষিত ছোটা উদয়পুর জেলার বদেলি তালুকে সেচ দফতরের ভুয়ো অফিস খুলে বসেছিল সন্দীপ রাজপুত। শাগরেদ হিসেবে নিয়েছিল আবু-বকর সইদকে। ভুয়ো অফিস চক্রের এই দুই পান্ডাকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে গুজরাত পুলিশ। জানা গিয়েছে, নিজেকে সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বলে পরিচয় দিতেন সন্দীপ। তাঁর হাতে ছিল সরকারি দফতরের নানা সিল। এরপর ভুয়ো প্রকল্পের নথি দেখিয়ে সেচ দফতরের আধিকারিকদের থেকে অর্থ বরাদ্দের দরবার করতেন সন্দীপরা। তাঁদের সেই আবেদনের ভিত্তিতে মঞ্জুরও হয়ে গিয়েছে ৪ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। ই-চালানের মাধ্যমে ‘এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, ইরিগেশন প্রজেক্ট ডিভিশন, বদেলি’র নামে হস্তান্তর করা হয়েছে সেই টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সেই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সম্প্রতি সন্দীপদের পক্ষ থেকে ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার ১২টি প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বর্তমান প্রোজেক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। তাঁর নির্দেশে গত ২৫ অক্টোবর সেই প্রকল্প খতিয়ে দেখতে গিয়ে ভুয়ো অফিসের বিষয়টি নজরে আসে সেচ দফতরের আধিকারিকদের। তাঁরা বুঝতে পারেন, সন্দীপদের কোনও অফিসই নেই। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। তদন্তকারী পুলিস ইনসপেক্টর অরুণ পারমার বলেন, “এফআইআর পেয়ে আমরা অভিযুক্তদের ধরতে একাধিক টিম গঠন করি। দু’ঘণ্টার মধ্যে সন্দীপকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আবু-বকর সইদের নাম জানতে পারি। আবু একজন সরকারি কন্ট্র্যাক্টর। সেই সন্দীপকে বুঝিয়ে এই প্রতারণার ফন্দি আঁটে। তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়।” ২৭শে অক্টোবর তাদের ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিকে, এই দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চেয়েছে কংগ্রেস। গুজরাত কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ দোসি বলেন, “এই ধরনের দুর্নীতি দু’বছর ধরে চলতে পারে না। রাজনৈতিক নেতাদের মদত এবং সরকারি কর্মীদের যোগসাজশ ছাড়া এটি সম্ভব নয়।” ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়েছেন মণীশ।