লেখিকা তথা সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে ২৩ বছর আগের একটি অভিযোগ নিয়ে মামলায় সায় দিয়েছেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল বিকে সাক্সেনা। জগৎবিখ্যাত এই লেখিকা ও মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে জঙ্গি দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। শিক্ষক শেখ সওকত হোসেনের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে একই ধারায়।
গত সপ্তাহেই সংবাদ পোর্টাল নিউজক্লিকের সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং সংস্থার হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে রাজধানীর পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। আদালতে দিল্লি পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে চিনের থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে দেশ বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনেছে। সাতদিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর মঙ্গলবার তাদের দশদিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজত বা জেলে পাঠিয়েছে আদালত। প্রবীর ও অমিত আইনজীবী মারফৎ গোটা অভিযোগকেই সাজানো বলে দাবি করেছেন।
বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ-র ধারার মামলা করা হয় সাধারণত গুরুতর অপরাধে যুক্ত জঙ্গি, নাশকতাবাদীদের বিরুদ্ধে। প্রবীর, অমিতের বিরুদ্ধে সেই আইনে মামলা করা নিয়ে দেশে যখন বিতর্ক চলছে তখন লেখিকা অরুন্ধতীও ছাড় পেলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ ধারার মামলা করার পাশাপাশি অন্য জঙ্গি দমন আইনের ধারাও প্রয়োগ করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং গ্রেফতারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
লেখিকার বিরুদ্ধে অভিযোগটি দায়ের হয়েছিল ২০১০-এ। দিল্লিতে একটি সেমিনারে অরুন্ধতী এবং হোসেন কাশ্মীরের ভারতভুক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেন এবং দেশের অখণ্ডতা বিনষ্টে উসকানি দেন বলে শ্রীনগরের বাসিন্দা এক বিজেপি সমর্থক দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দিল্লির তৎকালীন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সরকার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করার অমুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশকে। পরবর্তীকালে আম আদমি পার্টির সরকারও অনুমতি দিতে অস্বীকার করে। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে দিল্লির উপ-রাজ্যপাল কার সুপারিশের ভিত্তিতে মামলায় সায় দিলেন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার অবস্থান বদলে মামলায় সায় দিয়েছে নাকি উপ-রাজ্যপাল নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। প্রতিক্রিয়া মেলেনি অরুন্ধতী এবং হোসেনের।