এবার গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়াল আরএসএসের পত্রিকা ‘স্বস্তিকা’-র একটি নিবন্ধ। সেপ্টেম্বরের শেষে প্রকাশিত ওই নিবন্ধ এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে যে, রাজ্যে নানা দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত নিয়ে বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নীতি কি আলাদা? বঙ্গ বিজেপির নেতারা যখন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের দাবিতে এ বেলা-ও বেলা মুখ খুলে চলেছেন, তখন সঙ্ঘের মুখপত্রে ঠিক উল্টো দাবি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘এটা ঠিক অনেকের কাছে মূল সমস্যা, অভিষেক কেন জেলের বাইরে? এটা অবান্তর চিন্তা। তদন্তকারীদের মতে গ্রেফতার তদন্তের একটি অংশ। পুরো তদন্ত নয়। মনে হয় এই একমুখী ভাবনা এখানকার বিরোধীদের সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে।’
এই লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিতর্কের মুখে গেরুয়া শিবির। যে সংগঠনের আদর্শ নিয়ে দল চলে সেই আরএসএসের বক্তব্য জানার পরে নিচুতলার কর্মীরা কী বুঝবেন, তা নিয়ে চিন্তিত অনেক বিজেপি নেতা। ঘটনাচক্রে, এই বিতর্ক এমন একটা সময়ে তৈরি হয়েছে যখন স্বস্তিকার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে কলকাতায় এসেছেন আরএসএসের সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেলুড়ে ‘স্বস্তিকা’-র একটি অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা ভাগবতের। যদিও ‘স্বস্তিকা’ কর্তৃপক্ষ এবং ওই লেখক এই নিবন্ধ নিয়ে খুব ‘চিন্তিত’ নন। প্রবন্ধের লেখক নির্মাল্য মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আমার লেখা প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার পরে তা নিয়ে আমার কিছু বলা মানায় না। যা বলার পত্রিকার পক্ষেই বলা হবে।’
আর ‘স্বস্তিকা’র সহ-সম্পাদক সুকেশচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, ‘আমাদের একটি লেখা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। তবে তা অবান্তর। স্বস্তিকায় যে কোনও লেখার ক্ষেত্রে লেখকের মতামতের স্বাধীনতা থাকে। সেই মতোই লেখক লিখেছেন।’ সঙ্ঘের পত্রিকায় এমন একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ায় তা নিয়ে প্রকাশ্যে বিজেপি নেতারাও কিছু বলতে চাইছেন না। তবে দলের ভিতরে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। লেখাটি নেতা থেকে কর্মীদের মোবাইলে মোবাইলে হোয়াট্সঅ্যাপে ঘুরছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করা হলেও লেখার একটি অংশে সরাসরি তাঁরই সমালোচনা করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। লেখা হয়েছে, ‘রাজ্য জুড়ে সারা দিন কীর্তনের মতো বেজে চলেছে— পিসি-ভাইপো চোর।’ প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর মুখে সব সময়েই এই স্লোগান শোনা যায়। একই কথা বলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।