বাংলার রাজ্যপাল হয়ে আসার পর প্রথম কিছুদিন রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন সি ভি আনন্দ বোস। কিন্তু সেসব এখন অতীত। পঞ্চায়েত ভোটে তাঁর ভূমিকা থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর ছড়ি ঘোরানো— এসব নিয়ে রাজ্যপালের ওপর বেজায় বিরক্ত রাজ্য সরকার। এবার সরাসরি নাম করেই রাজ্যের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের এখানে বসে আছেন একজন মাননীয় রাজ্যপাল। তিনি বলছেন, আমি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় দেখব। আমি বলেছি আইন মেনে চলুন। আমার আপত্তি নেই। ওনার বাড়িতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোন নম্বর লাগানো আছে। আমি অনেকবার বলেছি এটা করবেন না। টাকা দেব আমরা, পলিসি করব আমরা, আর আপনি খবরদারি করবেন। কখনও আপনার শুনেছেন, মধ্যরাতে ১৬ জনকে টপকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বদলে গেছে।’
মমতার কথায়, ‘হঠাৎ শুনলাম কেরালার এক আইপিএসকে ভিসি করে দিয়েছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। রবীন্দ্রভারতীর ভিসি পদে নিয়ে আসা হয়েছে প্রাক্তন বিচারপতিকে। তাঁকে আমি চিনি। উনি আমার সঙ্গে পড়াশুনা করেছেন। আমি তাঁর বিরুদ্ধে বলছি না। কিন্তু তিনি তো কখনও শিক্ষকতা করেননি, তিনি আইনের কাজ করেছেন। তিনি চাইলে আইনের কাজে যেতে পারতেন। তার মানে কী? সিস্টেম ভেঙে দেওয়ার একটা চক্রান্ত চলছে। যদি রাজ্যপাল মনে করেন, তিনি সব করবেন, তাহলে নির্বাচিত সরকারের কোনও দরকার নেই।’
মমতার সাফ কথা, ‘আপনি যদি নিজেকে বড় ভাবেন, তাহলে মনে রাখবেন সমস্ত কাজে পলিসি ঠিক করেন রাজ্য সরকার। কোনও কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় যদি আপনার কথা শুনে চলে, তাহলে আমি কিন্তু অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। এখানে টিট ফর ট্যাট। দেখব আপনি কীভাবে মাইনে দিয়ে থাকেন।’ এরপরই রাজ্যপালকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি একটাও ফিল ফেরত পাঠান না। সবকটা বিল আটকে রেখে দেন। আমি বাধ্য হব রাজভবনের সামনে ধরনা দিতে।’