বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পথে শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার ফ্রি মেডিসিন প্রকল্পের দৌলতে এখন রাজ্যবাসীর জন্য সরকারি হাসপাতালে সবই মেলে নিখরচায়। সেই সুবিধা নিতে, কলকাতায় ও জেলার বড় সরকারি হাসপাতালগুলিতে বাংলাদেশি রোগীরা বিপুল সংখ্যায় হাজির হচ্ছেন। বাংলাদেশের ঠিকানা দিয়েই তাঁরা ভর্তি হচ্ছেন, কানের পর্দার অপারেশন, স্টেন্ট ও পেসমেকার বসানো, হাঁটু-কোমর প্রতিস্থাপন প্রভৃতি হচ্ছে সম্পূর্ণ নিখরচায়। পেয়িং ওয়ার্ড উডবার্নেও ভারতীয়দের সমান ফি দিয়ে তাঁরা ভর্তি হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলিতে বাংলাদেশিরা মেডিক্যাল ভিসা দেখিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। লোকাল গার্ডিয়ান বা আত্মীয়ের স্বাস্থ্যসাথী বা আধার কার্ড দেখিয়েও তাঁরা এই সুবিধা নিচ্ছেন। আউটডোরে প্রয়োজন পড়ছে না এইসবের কোনওটারই।
এপ্রসঙ্গে চিকিৎসক এবং হাসপাতাল প্রশাসক মহলের বক্তব্য, এতে রাজ্যের কোটি কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে। অন্যদিকে মেডিক্যাল ট্যুরিজমের সুবাদে, বেসরকারি হাসপাতালগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করছে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, বাংলাদেশের বহু রোগী ইন্ডোরে নিখরচায় চিকিৎসা পাচ্ছেন। এই ব্যাপারে গাইডলাইন আনা জরুরি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের কথায়, বাংলায় সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিরাট উন্নতি হয়েছে। সে’জন্য বাংলাদেশসহ বহু দেশের রোগীরা বাংলায় আসছেন। সরকারি ক্ষেত্রে তাঁদের চিকিৎসার জন্য গাইডলাইন আসছে শীঘ্রই। ভিনদেশী রোগীরা কীভাবে ভর্তি হবেন, কী কী কাগজপত্র লাগবে, কত টাকা খরচ পড়বে, চিকিৎসা পেয়িং হবে না ফ্রি, সবটাই তাতে থাকবে নির্দেশিকায়। বহু বাংলাদেশি রোগী আসছেন দালাল মারফত, সরকারি হাসপাতালে সব ফ্রি, কিন্তু দালালের চক্রে পড়ে তাঁদের মোটা টাকা খসাতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টিকেই এবার সুষ্ঠু ও কড়া নিয়মে বেঁধে আনতে তৎপর রাজ্য।