মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বিরোধীদের চুপ করাতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি লেলিয়ে দেয় বিজেপি। বারবারই এই অভিযোগ করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। সাম্প্রতিক কালে যেমন প্রায় রোজই দেশের কোথাও না কোথাও রাজনীতিকদের ডেরায় হানা দিতে দেখা যাচ্ছে এনফোর্সমেন্টে ডাইরেক্টরেট (ইডি)। যদিও ইডির দাবি, রাজনীতিকেরা মোটেও তাদের প্রধান টার্গেট নয়। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা মূলত বেআইনি অর্থ লেনদেনের অভিযোগের তদন্ত করে থাকে। সেই আইন কার্যকর হয়েছে ২০০৫ সালে। আর সেই আইনে অভিযুক্তদের মাত্র তিন শতাংশ হলেন রাজনীতিক।
প্রসঙ্গত, বিরোধীরা অনেকদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, ইডি, সিবিআই, আয়কর বিভাগ মূলত বিরোধী নেতা-নেত্রীদের টার্গেট করেছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলির মামলা বিশ্লেষণ করেও দেখা যাচ্ছে বিরোধীদের অভিযোগ মিথ্যা নয়। কিন্তু সংস্থাগুলি সরাসরি এই ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ। বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে বুধবার। কংগ্রেস-সহ ১৮টি বিরোধী দল বুধবার ইডির অধিকর্তাকে লেখা চিঠিতে আদানিদের বিরুদ্ধে গুচ্ছ অভিযোগ উল্লেখ করে বলেছে, তদন্তকারী সংস্থাটি যেন তাদের কর্তব্য থেকে সরে না যায়। চিঠির বক্তব্যকে অভিযোগ হিসাবে গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করার জন্য ইডির অধিকর্তাকে লেখা চিঠিতে বলেছেন বিরোধী নেতারা। ইডির বিরুদ্ধে বিরোধীদের নিশানা করার অভিযোগের কথাও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, বুধবার রাতেই ইডি সূত্রে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া পরিসংখ্যানে দাবি করা হয়, তারা মোটেই রাজনীতিকদের নিশানা করেনি। ইডির মামলায় অভিযুক্তদের মাত্র ২.৯৮ বা প্রায় তিন শতাংশ হলেন রাজনীতিক। তবে অভিযুক্ত রাজনীতিকেরা সংখ্যায় কত, সে তথ্য আবার চেপে গিয়েছে ইডি। এই তিন শতাংশ রাজনীতিকের কতজন বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী, শাসক দলেরই বা কতজন আছেন, সেই প্রশ্নের জবাবও তারা সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছে। যদিও ইডির পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ থেকে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এই তদন্তকারী সংস্থাটির নিশানায় থাকা রাজনীতিকের ৯৬ শতাংশই বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী।