গত বছরের ফলাফলের মধুর প্রতিশোধ নিল এটিকে মোহনবাগান। সোমবার যুবভারতীতে টাইব্রেকারে হায়দ্রাবাদ এফসিকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল সবুজ-মেরুন শিবির। নির্ধারিত সময়ে খেলার ফল ছিল ০-০। টাইব্রেকারে এটিকে মোহনবাগান জিতল ৪-৩ গোলে। হায়দ্রাবাদের জেভিয়ার সিভেরিয়ো এবং বার্থোলোমিউ ওগবেচে মিস করেন। অন্য দিকে, মোহনবাগানের একমাত্র মিস ব্রেন্ডন হ্যামিলের। পঞ্চম শটে বল জালে জড়িয়ে বঙ্গসন্তান প্রীতম কোটাল ফাইনালে তুলে দিলেন সবুজ-মেরুন শিবিরকে। আগামী শনিবার গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরুর মুখোমুখি হবে এটিকে মোহনবাগান।
এদিন হাড্ডাহাড্ডি ফুটবলের সাক্ষী থেকেছেন দর্শকরা। মোহন-কোচ ফেরান্দো আগ্রাসী খেলার কথা আগেই বলেছিলেন। মার্কুয়েসের দর্শনও আগ্রাসন নির্ভর ফুটবল। ফলে দু’দলের তরফেই ঝাঁকে ঝাঁকে আক্রমণ হয়েছে। তেমনই রক্ষণ বাঁচাতেও ব্যস্ত ছিল দুই দল। ফলে যে-ই আক্রমণ করুক, উল্টো দিকে থাকা দল প্রবল রক্ষণ করে বাঁচিয়ে দিচ্ছিল। দুই পর্ব মিলিয়ে যে ২১০ মিনিট খেলা হয়েছে, তাতে দুটো দলের খেলার মধ্যে ফারাক খুঁজে বের করা যায়নি। সোমবার প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে মোহনবাগান। লক্ষ্য ছিল যে কোনও মুহূর্তে গোল তুলে নেওয়া। আক্রমণ ভাগে দিমিত্রি পেত্রাতোসকে সামনে রেখে তাঁকে সাহায্য করার জন্য মনবীর সিংহ এবং কিয়ান নাসিরিকে জুড়ে দিয়েছিলেন কোচ জুয়ান ফেরান্দো। শুরুতেই কিয়ানের কাছে বক্সে একটি বল চলে এসেছিল। তিনি অবশ্য পৌঁছতে পারেননি। মোহনবাগানের আক্রমণ সামলে ধীরে ধীরে খেলায় ফিরতে থাকে হায়দ্রাবাদও। মূলত মাঝমাঠে দুই দলের যুদ্ধ হচ্ছিল। দুই দলেরই রক্ষণ ছিল জমাট। ফলে আক্রমণে উঠলেও গোল হচ্ছিল না। তার মাঝেই মোহনবাগান পর পর দু’টি সুযোগ নষ্ট করে। বিপক্ষ গোলকিপারের ভুলে বল চলে এসেছিল পেত্রাতোসের কাছে। তিনি বেশ কিছুটা এগিয়ে গড়ানো শট মারলে তা পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। এর পরেই মনবীরের শট লাগে ক্রসবারে। বাকি সময়ে মোহনবাগানের ফুটবলাররা একাধিক বার আক্রমণে উঠলেও রক্ষণ পোক্ত রেখেছিল হায়দ্রাবাদ।
এরপর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও আক্রমণের মন্ত্র নিয়ে নেমেছিল দুই দল। তবে ৫৭ মিনিটের মাথায় অল্পের জন্য এগোতে পারেনি মোহনবাগান। ডান দিকে বল পেয়ে আশিস রাই পাস দিয়েছিলেন বুমোসকে। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে বুমোসের গড়ানো শট ঝাঁপিয়ে বাঁচিয়ে দেন বিপক্ষ গোলকিপার গুরমিত সিংহ। এর পর আবার হায়দ্রাবাদের আক্রমণ শুরু হয়। আক্রমণে ওঠা আশিস রক্ষণে নেমে গিয়ে দলকে সামলান। তবে ওগবেচেকে নড়তেই দিচ্ছিল না বাগান রক্ষণ। ৭৩ মিনিটে বুমোসকে তুলে নিয়ে ফেদেরিকো গায়েগোকে নামিয়ে মাঝমাঠ আরও সচল করার চেষ্টা করেছিলেন ফেরান্দো। কিন্তু তা বিশেষ কাজে লাগেনি। ৮২ মিনিটের মাথায় সহজতম সুযোগ মিস করেন স্লাভকো। বাঁ দিক থেকে ক্রস ভেসে এসেছিল। মাথা ছোঁয়ালেই গোল। কিন্তু বল আর স্লাভকোর মাথার সংযোগই হয়নি। শেষের দিকে নায়ক হয়ে যেতে পারতেন ম্যাকহিউ। কর্নার থেকে তাঁর হেড অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে চলে যায়। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও দুই দল ছিল সতর্ক। ৯৮ মিনিটের মাথায় দূর থেকে শট নিয়েছিলেন হামতে। অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্বিতীয়ার্ধেও দুই দল গোলের সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারিনি। ফলত ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।