জগদীপ ধনকর বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন বারংবার নবান্নেত সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিল রাজভবন। রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির বদলে সরকারকে নিত্যদিন আক্রমণের পথেই হাঁটতেন তিনি। তবে তা এখন অতীত। গত নভেম্বরেই বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নিয়ে রাজভবনে আসা ইস্তক রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্কেরই ইঙ্গিত দিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। আর তারই ফলস্বরূপ বুধবার বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের বক্তৃতা সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকার যা লিখে দিয়েছেন, সম্ভবত সেটাই পাঠ করবেন সিভি আনন্দ বোস।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে বুধবার থেকে। সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী বাজেট অধিবেশন শুরু হয় রাজ্যপালের বক্তৃতা দিয়ে। সেই বক্তৃতা রাজ্যপাল নিজে লেখেন না। সরকার লিখে দেয়। রাজ্য মন্ত্রিসভায় সেই বক্তৃতার বয়ান অনুমোদিত হয়। তার পর সেটাই বিধানসভার অধিবেশনে পড়েন রাজ্যপাল। কিন্তু গত দু’বছর বাজেট অধিবেশনে দেখা গিয়েছে বক্তৃতার বয়ান নিয়ে টানাপোড়েন চলেছে নবান্ন ও রাজভবনে। নবান্ন যা লিখে দেবে, রাজ্যাপাল তা হুবহু পড়বেন না। তাঁর মনের মতো শব্দ ঢোকাবেন বা বাদ দেবেন। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি ও বিবাদ।
এহেন পরিস্থিতি বাজেট অধিবেশনে ধনকরকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ ছিল প্রশাসন। বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপাল যে বক্তৃতা পাঠ করেন তাতে মূলত সরকারের সাফল্যের কথা থাকে। সরকার তা মানুষকে জানাতে চায়। এই যেমন, কদিন আগে সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। তার আগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু যৌথ অধিবেশনে সরকারের লিখে দেওয়া বক্তৃতা পাঠ করেছেন। তার ছত্রে ছত্রে লেখা ছিল মোদী সরকার কত ভাল করছে। আর তা সরাসরি বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু ধনকর নবান্নের বক্তৃতা পাঠে অনীহা দেখানোয় তাঁর বক্তৃতা সরাসরি সম্প্রচারে অনুমতি দিতেন না স্পিকার। এবার তারই অন্যথা ঘটতে চলেছে সিভি আনন্দ বোসের বেলায়।