বিগত একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই বঙ্গ বিজেপি শিবিরে অব্যাহত শনির দশা। ক্রমশ দুর্বল হয়েছে সংগঠন। একের পর এক দলত্যাগ করেছেন একাধিক নেতা-নেত্রী। মুকুল রায়, বাবুল সুপ্রিয়, বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বিজেপি ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল। ২০২৩-এ সেই তালিকায় নতুন সংযোজন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। রবিবার তিনি দল বদল করেছেন। কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনে থাকলেও, সুমনের রাজনীতির শুরু বিজেপি থেকেই। সুমন বিজেপির আলিপুরদুয়ার সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক হন। পরে বিধায়ক হন। এবার অস্বস্তি বাড়ালেন গঙ্গাপ্রসাদ।
উল্লেখ্য, গঙ্গাপ্রসাদের হাত ধরেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সুমন। জানা গিয়েছে, যোগদানের নেপথ্যে গঙ্গাপ্রসাদ। সুমনের যোগদান পর্বের ছবিতে দেখা যাচ্ছে পাশে দাঁড়িয়ে করতালি দিচ্ছে গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। এতেই ঘুম উড়েছে বিজেপির। কারণ, গঙ্গাপ্রসাদ আরএসএসের আদি সদস্য। ছোট থেকেই স্বয়ংসেবক। সঙ্ঘের প্রশিক্ষণের সর্বোচ্চ তৃতীয় বর্ষ ‘প্রশিক্ষণ’ রয়েছে গঙ্গাপ্রসাদের। গঙ্গাপ্রসাদের সাংগঠনিক শক্তি দেখেই তাঁকে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দায়িত্ব পেয়েই আলিপুরদুয়ারে বিজেপির শক্তি বাড়ানোয় বড় ভূমিকা নেন তিনি। জেলা সভাপতি হন। ২০১৯ সালে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির জয়ের পিছনে কারিগর ছিলেন গঙ্গাপ্রসাদ। আলিপুরদুয়ার বিজেপির অন্দরে কান পাতলে শোনা যায়, গঙ্গাপ্রসাদের নেতৃত্বেই সাংগঠনিক জেলার সাতটি বিধানসভায় অর্থাৎ তুফানগঞ্জ, কুমারগ্রাম, কালচিনি, আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা, মাদিরহাট, নাগরাকাটা; সাতটাই জিতে নেয় বিজেপি।
সাম্প্রতিক সময়ে গঙ্গাপ্রসাদের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিল বিজেপির। বিধানসভা ভোটের পর নিঃশব্দে সরে যান তিনি। তৃণমূলে যোগ দিয়ে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান হন গঙ্গাপ্রসাদ। সেই গঙ্গাপ্রসাদের হাত ধরেই, সুমন জোড়া ফুলে গেলেন। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপি নেতা-কর্মী ও বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া গঙ্গাপ্রসাদের সাক্ষাৎকার থেকে জানা যাচ্ছে, বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লী থেকে প্রার্থী ঠিক করে দেওয়া পছন্দ হয়নি তার। এরপরেই ক্ষুব্ধ হন গঙ্গাপ্রসাদ। যার ফল এখন হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে পদ্মশিবির।