অব্যাহত জট। এখনও অবহেলার খাতায় বাংলা। দেখা নেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বকেয়া বরাদ্দ টাকার। একশো দিনের কাজের প্রকল্পের ক্ষেত্রে চিত্রটা তেমনই। এই পরিস্থিতিতে গ্রামে রাস্তা তৈরিতে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য। সূত্রের খবর, প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সব ঠিকঠাক থাকলে, শীঘ্রই দু’তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হতে চলেছে। তাতে গ্রামীণ সব রাস্তার কাজ (রাস্তা সংস্কার ও নতুন রাস্তা) করে ফেলতে হবে। এ কাজে এক-একটি জেলা হাতে পাবে দেড়-দু’মাস। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই অর্থ বরাদ্দ হওয়ার কথা। এ নিয়ে সম্প্রতি বৈঠকও করেছেন শীর্ষকর্তারা। জেলাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, চূড়ান্ত নির্দেশিকা প্রকাশের থেকে ৪৫-৬০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। সেই সময়সীমা মানতে হলে এপ্রিলের প্রথমসপ্তাহের মধ্যে সব কাজ শেষ করে ফেলা দরকার।“প্রকল্প চিহ্নিতই রয়েছে। দ্রুত সরকারি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কাজ শুরু হয়ে গেলে ভোট ঘোষণা হওয়ার পরেও তা আটকাবে না। ভোটের আগে কাজ শেষ করা গেলে ইতিবাচক প্রচারের সুযোগও থাকবে সরকারের কাছে”, জানিয়েছেন জনৈক সরকারি কর্তা
এপ্রসঙ্গে পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব কাজগুলো আমরা শেষ করতে চাই। বেশির ভাগই নতুন রাস্তা হবে। মানুষের খুব সুবিধা হবে।” পর্যবেক্ষকদের মতে, সরকারি সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল, গ্রামীণ রাস্তা নিয়েই মানুষের চাহিদা-দাবি-ক্ষোভ সবচেয়ে বেশি। আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দ (৬০%) না আসায় রাজ্য নিজের টাকার অংশ (৪০%) কাজে লাগাতে পারছে না। কেন্দ্রের টাকা কবে মিলবে, তা-ও কার্যত অজানা। এই পরিস্থিতিতে ভোটের আগে উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরি করে ফেলাও কার্যত অসম্ভব। তা উপভোক্তা তথা গ্রামীণ ভোটারদের মধ্যে উষ্মা তৈরি করতে পারে। সেই কারণে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও রাস্তা-খাতে বিপুল বরাদ্দ করতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, আগেই বেশ কয়েকটি দফতরের থেকে কিছু করে বরাদ্দ নিয়ে তা দেওয়া হয়েছিল পঞ্চায়েত দফতরকে। তা ছাড়া, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বিপুল অর্থ খরচের অপেক্ষায় রয়েছে। নবান্ন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, অর্থ কমিশনের অনির্ধারিত (আন-টায়েড) খাতের অন্তত ৫০% অর্থ বরাদ্দ করতেই হবে রাস্তা তৈরির কাজে। পাশাপাশি, যে সব প্রকল্পে কেন্দ্রের ভাগের টাকা পাওয়া যায়নি, সেগুলিতে রাজ্যের ভাগের টাকাও হাতে রয়েছে। সব মিলিয়ে রাস্তার কাজে এই অর্থ বরাদ্দ করতে রাজ্যকে তেমন বেগ পেতে হবে না বলেই সরকারি সূত্রের খবর। এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “শীঘ্রই টাকা জোগাড়ের রূপরেখা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।” পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কথায়, “এতে রাজ্যের নিজস্ব তহবিল, আরআইডিএফ (গ্রামীণ উন্নয়ন তহবিল)-এর ঋণ এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অর্থ রয়েছে।” বেশির ভাগ টেন্ডার হয়ে রয়েছে। কাজ দ্রুত শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।