শেষমেশ ঢোঁক গিলতে বাধ্য হল মোদী সরকার। অবশেষে হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ নিয়ে কলোজিয়ামের প্রস্তাবে অবশেষে সায় দিতে বাধ্য হল কেন্দ্র। প্রায় দু-মাস যাবৎ কেন্দ্র ও সুপ্রিম কোর্টের টানা পোড়েনের পর শনিবার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কেন্দ্রের বিজেপিশাসিত সরকার। বিচারপতি সময় বেঁধে নিয়োগের হুঁশিয়ারি দিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন বিচারপতিরা। গত ১৩ই ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের কলোজিয়াম হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতি সু্প্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে নিয়োগ করার কেন্দ্রের সুপারিশ চেয়ে পাঠায়। কিন্তু তা আটকে রাখে কেন্দ্র। বিচারপতি এসকে কল ও বিচারপতি এএস ওকারের বেঞ্চও দেরি নিয়ে অশন্তোষ প্রকাশ করে। কলোজিয়াম নিয়ে দীর্ঘদিন টালবাহানা চলতে থাকলে ৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের তরফে কড়া বার্তা পাঠানো হয় কেন্দ্রকে। তারপরই সেই কলোজিয়ামে সিদ্ধান্তে সম্মতি দেয় আইন মন্ত্রক। শুক্রবারই তা পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতি কাছে তিনিও সম্মতি দিলে শনিবারই ঘোষণা করা হয় সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ বিচারপতির নিয়োগের কথা। শনিবার যে পাঁচজন বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হল তারা হলেন রাজস্তান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পঙ্কজ মিথাল, পাটনা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় কারোল, মণিপুর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার, পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতি এহেসানুদ্দিন আমনুল্লাহ ও এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি মনোজ মিশ্র।
প্রসঙ্গত, আগামী সপ্তাহের গোড়ায় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হিসাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে শপথ নেবেন পাঁচ বিচারপতি। তার পর সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩২। বর্তমানে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে ধরে সুপ্রিম কোর্টে ২৭ জন বিচারপতি কাজ করছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে গড়া কলেজিয়ামের সুপারিশ বারবারই ফেলে রেখেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। বরং শীর্ষ আদালতকে লক্ষ্য করে প্রায় রোজ সমালোচনায় মুখর হচ্ছেন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। এদিনও ফের বলেছেন, সরকারের মালিক কেবল ‘জনগণ’। শুক্রবারই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কলেজিয়ামের সুপারিশ মতো দ্রুত পাঁচ জন বিচারপতির নামে সিলমোহর দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে চলা একটি মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি বিচারপতি এসকে কউল এবং বিচারপতি এএস ওকার বেঞ্চকে এ কথা জানান। সেই মামলাতেই শুনানি চলাকালীন বিচারপতিরা কেন্দ্রের অহেতুক ঔদাসীন্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ‘‘এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের কোনও পক্ষ নিতে বাধ্য করবেন না। তা হলে তা আপনাদের পক্ষে খুবই অস্বস্তিদায়ক হতে পারে’’, সাফ জানায় বেঞ্চ। এর পরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেয়ে কেন্দ্র।