এই মাটিতে দাঁড়িয়েই এক সময় ‘সিপিএমের শেষপুর’ স্লোগান তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই কেশপুরে যাচ্ছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তৃণমূল তথা মমতার রাজনৈতিক উত্থানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এককালের ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ কেশপুরে সভা করবেন অভিষেক।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে জন্ম হয়েছিল তৃণমূলের। তার পর থেকেই অবিভক্ত মেদিনীপুরের জনপদ কেশপুরে সিপিএমের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে যেতে হয়েছিল বাংলার বর্তমান শাসক দলকে। দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছিল কয়েক বছর ধরে। সেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল পাঁশকুড়া উপনির্বাচন কেন্দ্র করে। তখন ঘাটাল নয়, পাঁশকুড়া ছিল লোকসভা আসন। সেই আসনেই উপনির্বাচনে অধুনাপ্রয়াত বামনেতা গুরুদাস দাশগুপ্তকে হারিয়ে দেন তৃণমূলের আনকোরা প্রার্থী বিক্রম সরকার। এর পরেই পাঁশকুড়ার অন্তর্গত কেশপুর বিধানসভা এলাকার হারানো গ্রামাঞ্চল দখলে ঝাঁপিয়ে পড়ে বামেরা।
সেই শুরু। দেশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সিপিএম-তৃণমূলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ প্রায় নিয়মিত হয়ে যায়। এক সময়ে এই কেশপুর নিয়েই মমতা স্লোগান তুলেছিলেন, ‘কেশপুর, সিপিএমের শেষপুর’। যদিও ২০১১ সালে এই আসন তৎকালীন জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছিলেন মমতা। রজনীকান্ত দলুই হেরেছিলেন ৩৩,৮৫১ ভোটে। ২০১৬ সালে সেই কেশপুরেই একলা লড়ে তৃণমূল জেতে ১ লাখ ১ হাজার ১৫১ ভোটে। নন্দীগ্রামের মেয়ে শিউলি বিধায়ক হন কেশপুর থেকে। বিজেপি পেয়েছিল ৯ হাজার ৭৩ ভোট।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের তৃণমূলের কাছে ‘লক্ষ্মী’ হয়েছিল কেশপুর। অঙ্ক বলছে, ঘাটাল লোকসভা আসনে তৃণমূলের ‘মুখরক্ষা’ করেছিল কেশপুরই। সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব) জিতেছিলেন ১ লাখ ৭ হাজার ৯৭৩ ভোটে। এর মধ্যে কেশপুর থেকেই ব্যবধান ছিল ৯২ হাজার ৭৪ ভোট। এবার অভিষেক তাঁর সভার জন্য বেছে নিয়েছেন সেই কেশপুরকেই। দুই মেদিনীপুর মিলিয়ে গত এক বছরে এটি তাঁর তৃতীয় সভা। এর আগে হলদিয়া, কাঁথির দু’টি সভা থেকে সাংগঠনিক বার্তা যেমন দিয়েছেন অভিষেক, তেমনই বলেছেন সাংগঠনিক সংস্কারের কথাও। এই সভাতেও মূলত সংগঠনের কথাই শোনা যাবে অভিষেকের মুখে।