বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছিল হাওড়া স্টেশন। আসার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু মাতৃবিয়োগের জন্য তিনি আসতে পারেননি। কিন্তু এসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁকে দেখেই বিজেপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা যে ভাবে ‘জয় শ্রীরাম শ্লোগান’ দিতে শুরু করেন তার জেরে রীতিমত ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের মঞ্চেই ওঠেননি তিনি সেই ঘটনার জেরে।
এতেই কার্যত গোটা ঘটনাটি ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের এহেন কাণ্ডে রীতিমত ক্ষুব্ধ হন রেলের আধিকারিকেরা। কেননা এদিনের অনুষ্ঠানটি ছিল সম্পূর্ণ ভাবে সরকারি অনুষ্ঠান ও রেলের অনুষ্ঠান। সেখানে কেন রাজনৈতিক শ্লোগান দেওয়া হল তা নিয়ে বিতর্ক যেমন বেঁধেছে তেমনি প্রশ্ন উঠেছে শুধুমাত্র বিজেপির কর্মী সমর্থদের হাতেই কেন পৌঁছেছিল এদিনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। আর এই প্রশ্নের এখন বিদ্ধ হয়েছে পূর্ব রেলের সিপিআরও একলব্য চক্রবর্তী ও ডিআরএম মণীষ জৈন। দুইজনই বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।
শুক্রবারের এই শ্লোগান কাণ্ডের জেরে রেলের তরফে ইতিমধ্যেই নিজস্ব একটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেলমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী দলীয় নেতা থেকে কর্মী সমর্থকদের বার বার শ্লোগান থামাতে বললেও তাঁরা সে কথায় কর্ণপাত করেননি। আর তা দেখেই অনেকের ধারনা আগে থেকেই গোটা ঘটনার স্ক্রিপ্ট করে রাখা হয়েছিল। আর তা করা হয়েছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার জন্যই। বঙ্গ বিজেপির নেতারাই সেই ঘটনায় জড়িত। রেলের এই অনুষ্ঠানে অতিথিদের আসনে কীভাবে নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে কর্মী ও সমর্থকদেরই আমন্ত্রণ জানানো হল সেই প্রশ্নই এখন উঠে গিয়েছে। আর সেখানেই বিতর্কের আঙুল উঠেছে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ও ডিআরএম’র দিকে। কেননা দুইজনই শুধু বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত তাই নয়, এই দুই জনের হাতেই ছিল অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র বিলির কাজ। সেই জায়গায় কেন এমন লোকদের ডেকে আনা হল যারা কেন্দ্র সরকারের অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার সাহস পেয়ে যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সামনেই!