আজ, অনুষ্ঠানের দিন ভোরেই মাতৃবিয়োগ ঘটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তাই এদিন ভার্চুয়াল উদ্বোধনেরই সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাঁকে। অথচ, সেই অনুষ্ঠানে রীতিমতো ‘অসভ্যতা’ করতে দেখা গিয়েছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। পুরো অনুষ্ঠান যখন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সৌহার্দ্যের আবহে হওয়ার কথা, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখামাত্রই বিজেপি কর্মীরা তুমুল হইচই শুরু করে দেন। জোর গলায় দেওয়া হয় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান।
প্রসঙ্গত, গত বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে অমিত শাহ বলেছিলেন, মমতা যেখানে যাবেন সেখানেই তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ শুনতে হবে। ততদিনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সরকারি অনুষ্ঠানে উশৃঙ্খলতার ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে। সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের অনুষ্ঠানের মঞ্চে সেদিন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রী, রাজ্যপাল প্রমুখ। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে ভাষণ শুরু করতেই শুরু হয়ে যায় জয় শ্রীরাম ধ্বনি। শাহের কথা সত্যি প্রমাণ করে শুক্রবার হাওড়া স্টেশনেও মুখ্যমন্ত্রী যেতেই জয় শ্রীরাম ধ্বনি ওঠে দর্শকাসন থেকে।
ভিক্টোরিয়ার ঘটনায় মঞ্চে উপবিষ্ট প্রধানমন্ত্রীকে সেদিন স্লোগান থামাতে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপির নেতাদেরও। অনুষ্ঠানের ঘোষক বারে বারে অনুরোধ করেন স্লোগান থামাতে। থামেনি সহজে। ধ্বনি থামলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এটা রাজনৈতিক স্লোগান। আমার মনে হয়, সরকারি অনুষ্ঠানের একটা শালীনতা থাকা উচিত। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নয়। এটা সমস্ত দলেরই কর্মসূচি। জনতার কর্মসূচি।’ মমতা সেদিন আরও বলেন, ‘আমায় এখানে আমন্ত্রণ জানানোয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে অসম্মান করা শোভনীয় নয়। এর প্রতিবাদে আমি এখানে কিছু বলছি না।’
আজ অবশ্য কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার চেষ্টা করেন স্লোগানবাজি থামাতে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও চুপ করতে বলেন সবাইকে। রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণব মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন মঞ্চে উঠতে। তিনি রাজি হননি। তবে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যাননি এদিন। প্রতিবাদে মঞ্চের নীচে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেন। ভিক্টোরিয়া এবং হাওডা, দুই জায়গার অনুষ্ঠান নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে শয়ে শয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা ঢুকে পড়ছে কীভাবে। কারা তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।