তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করবেন। এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু আজ, অনুষ্ঠানের দিন ভোরেই মাতৃবিয়োগ ঘটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তাই এদিন ভার্চুয়াল উদ্বোধনেরই সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাঁকে। অথচ, সেই অনুষ্ঠানে রীতিমতো ‘অসভ্যতা’ করে বসল বিজেপি কর্মীদের একাংশ। পুরো অনুষ্ঠান যখন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সৌহার্দ্যের আবহে হওয়ার কথা, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখামাত্রই বিজেপি কর্মীরা তুমুল হইচই শুরু করে দিলেন। জোর গলায় দেওয়া হল ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। তাতে কর্মীদের সঙ্গে শামিল হলেন বিজেপির জনপ্রতিনিধিরাও।
অতিথিদের জন্য তৈরি মঞ্চে বসেছিলেন বিজেপির সাংসদ, বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে উদ্দেশ্য করে জোর গলায় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তুলতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। ঠিক যেভাবে ২০২১ সালে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মমতাকে ঘিরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া হয়েছিল, তেমনভাবেই সরকারি অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট একটি ধর্মের স্লোগান তুলে গোটা অনুষ্ঠানটিকেই কলুষিত করা হল। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর মায়ের মৃত্যুর আবহেই যখন গোটা অনুষ্ঠান হল, তখন এই ধরনের হই-হট্টগোল, এই ধরনের অসৌজন্য না দেখালেও পারতেন বিজেপি কর্মীরা। এমনটাই বলছে ওয়াকিবহাল মহল।
মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি কর্মীদের এই নিন্দনীয় আচরণের প্রতিবাদ নিজের মতো করে করলেন। রেলমন্ত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও মূল মঞ্চে উঠলেন না। মঞ্চের পাশে বসে রইলেন। তিনি যে গোটা বিষয়টিতে বিরক্ত তা বোঝা যাচ্ছিল। তবে, সেই বিরক্তি সত্ত্বেও শান্ত থাকলেন মমতা। বরং প্রধানমন্ত্রীকে সৌজন্য দেখালেন। মাতৃশোকে কাতর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আপনার মা মানে আমারও মা। আপনার এই দুঃখের দিনে কোনও কথাই যথেষ্ট নয়। আপনি যে এই শোকের সময়ে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে এসেছেন সেজন্য ধন্যবাদ। এই শোকের দিনে আপনি এভাবে অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন সেজন্য কৃতজ্ঞতা।’