সম্প্রতি চীন-সহ কয়েকটি দেশে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে করোনা সংক্রমণ। যার জেরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে এদেশেও। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে আগাম তৎপরতা। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কতটা প্রস্তুত দেশ, সেইসব বিষয় খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের হাসপাতালে মক ড্রিল হতে চলেছে। দিল্লীতে মক ড্রিল খতিয়ে সফদরজং হাসপাতালেও যাবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। চীন-সহ কিছু দেশে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের প্রস্তুতি খতিয়ে যে মক ড্রিল করা হবে, সোমবার সেই সংক্রান্ত অ্যাডভাইসরি জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। করোনা মোকাবিলায় সব জেলা কতটা তৈরি, কতগুলি আইসোলেশন বেড আছে, অক্সিজেনের প্রাপ্র্যতা, অক্সিজেন থাকা বেডের সংখ্যা, কতজন স্বাস্থ্যকর্মী (চিকিৎসক, নার্স, আয়ূষ চিকিৎসক ও অন্যান্য প্রথমসারির কর্মী) আছেন, খতিয়ে দেখা হবে তা।
এর পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন জেলায়-জেলায় কতজন করোনার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত হয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের জোগান, করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ও পরিকাঠামো, অ্যাম্বুলেন্সের (লাইফ-সাপোর্ট থাকা অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যাও) প্রাপ্যতার মতো বিষয় খতিয়ে দেখে নিতে চাইছে কেন্দ্র। যাতে কোনওভাবে ভারতে ফের সংক্রমণ বাড়লেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর চাপ না পড়ে এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার আরও ভালোভাবে করোনার মোকাবিলা করা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে যে তথ্য জানানো হয়েছে, তাতে ভারতে একদিনে ১৯৬ জন নয়া করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। তার ফলে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৪২৮। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে র্যান্ডম টেস্টিং শুরু হয়েছে। চিন, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এবং জাপান থেকে আগত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হচ্ছে। তারইমধ্যে বিহারে পাঁচ বিদেশির (থাইল্যান্ডের চারজন এবং মায়ানমারের একজন) করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) বৈঠকে মাণ্ডব্য বলেছেন, “এই মহামারী মোকাবিলার আগের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা একাধিক পদক্ষেপ করছি। সেরকমভাবেই মঙ্গলবার দেশজুড়ে মক ড্রিলের আয়োজন করা হবে। ওইরকম পদক্ষেপের ফলে আমরা প্রস্তুতির ঝালাই হয়ে যাবে।” এর ফলে ক্রমাগত জনস্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে আরও সুষ্ঠু ও মজবুত করে তোলা যাবে বলেই আশাবাদী তিনি।