আবেদন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। বিগত ২০০২ সালে গণধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিলেন বিলকিস বানোর আইনজীবী। সেই আবেদন শনিবার খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যদিও আদালতের এই সিদ্ধান্তকে আইনি হার বলতে নারাজ বিলকিসের স্বামী ও আইনজীবী শোভা গুপ্তা। বিসকিসের ধর্ষণের ঘটনায় ১১ দোষী সাব্যস্তের মুক্তির রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন প্রসঙ্গে শোভা জানান, শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিলেও বিষয়টিকে আইনি হার হিসেবে দেখছেন না। সংবিধান ও আদালতের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাঁদের। “ন্যায় মিলবে। লড়াই ছাড়লে চলবে না”, জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, বিলকিসের আইনজীবী বলেন, “এটা একটা ধাক্কা যে পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয়েছে। তবে আমরা এখনও আদেশনামা হাতে পাইনি। আদালতের বিস্তারিত আদেশনামা পড়ার জানতে পারব পুনর্বিবেচনার আবেদন বাতিলের সিদ্ধান্তের পিছনে ঠিক কী যুক্তি রয়েছে। আমরা চাই ১৩ মে, ২০২২-এর আদালতের অধ্যাদেশ সংশোধিত হোক। আদালত জানিয়েছিল, দোষীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেবে গুজরাট সরকার। যদিও সেই আদেশ মহারাষ্ট্রের আদালতের। অন্যদিকে অপরাধের ঘটনা ঘটেছিল গুজরাটে। এখানেই আইনি আপত্তির প্রশ্ন ওঠে।” সব মিলিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর বিলকিস ও তাঁর আইনজীবী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গোধরা হিংসার সময়ে অন্ত্বসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের অভিযোগে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৫ই আগস্ট গুজরাটের বিজেপিশাসিত সরকারের নির্দেশে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। ধর্ষকদের কার্যত বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে। তারপরেই দেশজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিলকিস বানো ও তাঁর আইনজীবী শোভা গুপ্তা। যদিও বিলকিসের আরজি খারিজ করেছে আদালত। জানা গিয়েছে, ১৯৯২ সালের সাজা মকুব করার নিয়মের আওতায় ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। চলতি বছরের মে মাসের সেই সিদ্ধান্তের জেরেই আগস্ট মাসে ১১ জন ধর্ষকদের মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন বিলকিস বানো।