২২ বছর ধরে স্নান করেননি এক ব্যক্তি। এ যেন স্বয়ং ভীষ্ম। নাম ধর্মদেব রাম। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে স্নান করেননি তিনি। এবং ততদিন করবেন না, যতদিন না মহিলাদের উপর অত্যাচার, নিরীহ পশুদের হত্যা করা এবং জমি নিয়ে বিবাদ বন্ধ না হয়! কলিযুগের এই ভীষ্মের নাম ধর্মদেব রাম। বিহারের গোপালগঞ্জ জেলার বৈকুন্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। জানা গেছে, গত ২২ বছর ধরে শরীরে এক ফোঁটাও জল ছোঁয়াননি ধর্মদেব। স্ত্রী এবং পুত্রের মৃত্যুও কঠোর প্রতিজ্ঞা থেকে এক চুল টলাতে পারেনি তাঁকে। জানা গেছে, বিয়ের আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গের জগদ্দলে একটি কারখানায় কাজ করতেন তিনি। ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন। তারপর দিব্যি স্বাভাবিকই ছিল সব। কিন্তু ১৯৮৭ সাল নাগাদ আচমকাই তিনি উপলব্ধি করেন, জমি সংক্রান্ত বিবাদ, মহিলাদের উপর হিংসার ঘটনা এবং নিরীহ পশুদের হত্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
‘এর উত্তর খুঁজতেই আমি একজন গুরুর শরণাপন্ন হই। তিনি আমাকে তাঁর শিষ্য করে নেন, এবং ত্যাগের পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করেন। তখন থেকেই আমি তা মেনে চলছি, এবং ভগবান রামচন্দ্রের ধ্যান করতে শুরু করেছি,’ একটি সাক্ষাৎকারে জনিয়েছেন ধর্মদেব। ২০০০ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দেশের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু বাড়ির চাপে আবার কাজে ফেরত যেতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু কারখানার মালিক যখন জানতে পারেন, তিনি খাবার এবং স্নান ত্যাগ করেছেন, তখন তাঁকে চাকরি থেকে বের করে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়। ২০০৩ সালে মারা যান তাঁর স্ত্রী। তখনও তিনি জল স্পর্শ করেননি। এরপর মারা যায় তাঁর ছেলে। তাতেও সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি ধর্মদেবের। শেষ সন্তান মারা যায় এই বছরের ৭ জুলাই। তারপরেও নিজের প্রতিজ্ঞায় অনড় ধর্মদেব। তবে এত বছর স্নান না করলেও তার জন্য কোনও শারীরিক সমস্যা হয়নি তাঁর, এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
