বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনার পর ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, গত ৫৯ বছরে ৪০০-র বেশি দুর্ঘটনা। যাতে প্রাণ হারিয়েছেন দেড়শোর বেশি পাইলট। তা সত্ত্বেও কেন ‘উরন্ত কফিন’ রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনায়? আরও একবার এই নিয়ে উঠল প্রশ্ন। গতকাল রাজস্থানের বারমেরে ফের ভেঙে পড়ে মিগ-২১ যুদ্ধবিমান । মৃত্যু হয় দুই পাইলটের। আর এই ঘটনার পর ফের একবার এই যুদ্ধবিমানের ট্রাক রেকর্ড নিয়ে শুরু হয়েছে কাঁটাছেড়া। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান বর্তমানে আর ব্যবহার করে মিগ-২১। তা হলে ভারতকে কেন ব্যবহার করতে হচ্ছে সোভিয়েত আমলের এই যুদ্ধবিমান? দুর্ঘটনার পর এই নিয়ে মুখ খুলেছেন একাধিক অবসরপ্রাপ্ত বায়ুসেনা অফিসার।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫-তে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন তৈরি করে মিগ-২১ যুদ্ধবিমানঌ ১৯৬২-র চীন যুদ্ধের পরের বছর এই ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট কেনে ভারত। এদেশে মিগ-২১ আসার কয়েকদিনের মধ্যেই ১৯৬৩-র ডিসেম্বরে প্রথমবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এই যুদ্ধবিমান। ১৯৮৫-তে মিগের এই বিশেষ মডেলটি বানানো বন্ধ করে দেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। ফলে মিগের রক্ষনাবেক্ষণ নিয়ে শুরু হয় সমস্যা। বায়ুসেনা সূত্রে খবর, গত বছর ৫ বার দুর্ঘটনায় পড়ে মিগ-২১। যাতে মৃৃত্যু হয় ২ জন পাইলটের। চলতি বছরের ১৭ মার্চ গোয়ালিয়ার এয়ারবেসে টেক-অফের পরই ভেঙে পড়ে মিগ-২১। প্রাণ হারান গ্রুপ ক্যাপ্টেন আশিস গুপ্ত। গত ২০শে মে রাজস্থানের সুরাটগড়ে ঘটে একই রকম দুর্ঘটনা। সেখানে মৃত্যু হয় ২৮ বছরের স্কোয়াড্রন লিডার অভিনব চৌধুরীর।
উল্লেখ্য, বারবার মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়া নিয়ে কয়েক বছর আগে প্রশ্ন ওঠে সংসদেও। ২০১২-তে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীএ কে অ্যান্টনি বলেন, “রাশিয়ার থেকে কেনা ৮৭২টি মিগ যুদ্ধবিমানের অর্ধেকই দুর্ঘটনায় নষ্ট হয়েছে। যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে ১৭১ জন পাইলট ও ৩৯ জন সাধারণ মানুষের।” এরপরও কেন মিগ-২১কে বাতিল করছে না বায়ুসেনা? অবসরপ্রাপ্ত ভাইস এয়ার মার্শাল সুনীল নানোদকরের কথায়, “বায়ুসেনার দরকার আরও বেশি সংখ্যায় মাল্টিরোল এয়ারক্রাফ্টের । কিন্তু সেটা হাতে পেতে সময় লেগে যাচ্ছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও বাতিল করা যাচ্ছে না মিগ-২১কে।”