বাংলায় প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই স্বাস্থ্য, শিক্ষার পাশাপাশি শিল্পের দিকেও বাড়তি নজর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানই যে পাখির চোখ, তাঁর সরকারের আগের দু’দফায় তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। যার ফলে বাংলাই এখন বিনিয়োগকারীদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছে। এবার বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল মমতা সরকার। বাম আমলে কাটোয়ায় অধিগৃহীত প্রায় ৫৫৬ একর পড়ে থাকা জমি এবার কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। জমিটি এখন এনটিপিসির হাতে রয়েছে। এবার সেটাই ফেরত নিয়ে শিল্পস্থাপনের কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে এনটিপিসিকেও। নবান্ন সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে ২০০৭-২০০৮ সালে কাটোয়ায় ৫৫৫.৮৯৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। শ্রীখণ্ড, দেবকুণ্ড ও কাশীগ্রাম মৌজার ওই জমি বামফ্রন্ট সরকার এনটিপিসিকে হস্তান্তর করে ২০১০ সালে। এতে ৯,৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হওয়ার কথা ছিল। তবে প্রকল্পটির জন্য প্রয়োজন ছিল আরও কিছুটা জমির। জমি সংক্রান্ত জটিলতা কাটানোর ব্যাপারে রাজ্য পরবর্তীকালে পর্যাপ্ত পদক্ষেপও করেছিল। তবু নানা কারণে প্রকল্পটি এগয়নি। এবার ওই জমিই অন্য প্রকল্পে ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলায় আরও বিনিয়োগ টানতে উদ্যোগী হল নবান্ন। সূত্রের খবর, এই বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাজ্যের দুই সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম এবং পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন নিগম।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের প্রস্তাব অনুযায়ী, ওই জমিতে একটি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়বে তারা। এছাড়া শিল্প উন্নয়ন নিগমের তরফে ওই জায়গাতেই শিল্পতালুক গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্য এই অবস্থায় দুই সংস্থার মধ্যে সমন্বয় চায়। তারা সরাসরি এনটিপিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে জমি ফেরতের বিষয়ে আলোচনা করবে। জানিয়েছে সরকারি সূত্র। এক আধিকারিক জানান, জমি ফেরত পাওয়ার জন্য রাজ্যের কী করণীয়, সে বিষয়ে এনটিপিসির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। তারপরেই পরিষ্কার হবে, জমি হাতে পাওয়ার পর নতুন কাজ শুরু করতে রাজ্যের কত সময় লাগবে। জমি হাতে পাওয়ার জন্য পুরোদমে ঝাঁপাচ্ছে রাজ্য। প্রসঙ্গত, বুধবারই হুগলির অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পড়ে থাকা জমি শিল্পায়নের কাজে ব্যবহারের কথা বলেন। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে।