গতকাল থেকে কার্যত হইহই ফেলেছে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া কুড়ি কোটিরও বেশি টাকার হিসেব। সাথে সাথে নাম উঠে এসেছে মোনালিসা দাসেরও। শান্তিনিকেতনে তাঁর নাকি বাড়ি নেই। কাজেই, সেই বাড়িতে ইডির অভিযান চালানোর প্রশ্নই নেই। মন্ত্রী পার্থকে গ্রেফতারের পরে এমনই দাবি করলেন মোনালিসা দাস। তাঁর নামে যা-যা বলা হচ্ছে, সবই অসত্য। বললেন অধ্যাপিকা মোনালিসা দাস। রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের আগে থেকেই মোনালিসার নামটি মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে বিভিন্ন মহলে ঘোরাফেরা করছে। পাশাপাশিই ছড়িয়েছে এমন সব ‘খবর’-ও যে, মোনালিসার শুধু শান্তিনিকেতনেই ন’টি বাড়ি রয়েছে। সেই সব বাড়িতেও নাকি ইডি ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালিয়েছে। অন্যান্য কয়েকটি সূত্রে দাবি করা হচ্ছিল, ইডির হাতে আটক অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মতোই মোনালিসার উপরেও নাকি ‘নজর’ রেখেছে ইডি।
তিনি সাফ বলেছেন, তাঁর নামে যা-যা বলা হচ্ছে, সবই অসত্য। তিনি বলেন, ‘‘না, এ ব্যাপারে আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। আমি অত্যন্ত সাধারণ এক জন শিক্ষক মানুষ। সাধারণ জীবনযাপন করি। বাইরে থেকে কে কী বলছেন, না বলছেন, সেটা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারব না। আমার কোনও রকম কোনও প্রতিক্রিয়া নেই এ প্রসঙ্গে।’’ আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার বিভাগীয় প্রধান মোনালিসা। আসানসোলের এসবি গড়াই রোডের বরফকল মোড়ের বিবেকানন্দ পল্লিতে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিনি একাই ওই এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু দিন তিনি ওই বাড়িতে যাতায়াত করেননি। তবে কলকাতাতেও বাড়ি আছে মোনালিসার। পার্থের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন? মোনালিসা বলছেন, ‘‘এক জন শিক্ষকের সঙ্গে এক অভিভাবকের যেমন সম্পর্ক হয়, আমাদেরও তেমন।’’
টানা ২৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের শেষে শনিবার সকালে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ। ইডির দাবি, ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটিরও বেশি নগদ টাকা উদ্ধার করেছে তারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন অর্পিতার বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালাচ্ছে, সেই সময়েই একাধিক পরিসরে বলা হতে থাকে, বীরভূমের শান্তিনিকেতনে একাধিক বাড়িতে অভিযানে ব্যস্ত ইডি। তখনই উঠে আসে মোনালিসার নাম। নেটমাধ্যমেও সেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। মোনালিসা বলেন, ‘‘আমার শান্তিনিকেতনে কোনও বাড়ি নেই। মোনালিসার জবাব, ‘‘সম্পূর্ণ অসত্য কথা! আমার কিচ্ছু বলার নেই। আমি এক জন সাধারণ শিক্ষক মানুষ। শিক্ষক পরিবারের সন্তান। সততার সঙ্গে বাঁচি। সততার সঙ্গেই থাকব। বাকি বাইরে থেকে কোনও মানুষ কিছু মন্তব্য করলে তার কোনও দায় আমার নেই।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘যা বলা হচ্ছে, তা অত্যন্ত অমূলক। আমার অর্জন, আমার চাকরি, আমার পড়াশোনা— এই সব কিছুর বিষয়েই আমি ভীষণ ভাবে সৎ। তিনি শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা দফতরে ছিলেন। আমি একজন শিক্ষক। কাজে কখনও কোনও যোগাযোগ হতেই পারে। ততটুকুই। তার থেকে বেশি কিছু নয়।’