ধর্মীয় ভাবাবেগ্র আঘাতের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। হিন্দুত্ববাদীদের তীব্র রোষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। আর তা হয়েছে তাঁর আসন্ন ছবি ‘কালী’র পোস্টার ঘিরে। কথা হচ্ছে পরিচালক লীনা মণিমেকালাইয়ের। তাঁর গ্রেফতারের দাবি উঠতেই এবার মুখ খুললেন পরিচালক।
তিনি বলেন, ‘আমার ছবিতে কালী ভালবাসা এবং মানবতায় বিশ্বাসী। টরন্টোর ডাউনটাউনের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষকে বুকে জড়িয়ে ধরে সে। রেগে মিউজিক শুনতে শুনতে পার্কে বসা পথচারীর সঙ্গে সিগারেট ভাগ করে নেয় সে। তাঁর অসাধারণ ক্ষমতাশালী এবং একইরকম লাবণ্যময় হাতে ধরা থাকে কুইয়ার পতাকা এবং ক্যামেরা। এখন বলুন, কে কার অনুভূতিতে আঘাত হানছে?’
প্রসঙ্গত, লীনার ছবির পোস্টারে দেখা যাচ্ছে কালীর সাজে নীলবর্ণা এক মহিলাকে, তার মাথায় মুকুট, এক হাতে ধরা ত্রিশূল, অন্য হাতে জ্বলন্ত সিগারেটে টান দিচ্ছে সে। পিছনেই জ্বলজ্বল করছে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের প্রাইড পতাকা। টুইটারে ছবিটির পোস্টার শেয়ার করেন লীনা। এরপরেই শুরু বিতর্কের। ব্যক্তি-স্বাধীনতার নামে মানুষের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেওয়া যায় না, এই দাবি তুলে লীনার গ্রেফতারির দাবিতে সোচ্চার হয় নেটিজেনরা।
এই প্রসঙ্গে লীনার যুক্তি, ‘এদের সঙ্গে বিশ্বাস বা ভক্তির কোনও সম্পর্ক নেই। এদের চালিকাশক্তি হল ঘৃণা। বর্তমান ফ্যাসিস্ট হিন্দুত্ববাদীরা এদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে ঘৃণা উস্কে দিয়ে ভোট আদায় করা। এরাই দেশের আন্দোলনকারী, শিল্পী এবং সাংবাদিকদের পিছনে পড়ছে এবং সংখ্যালঘুদের গণহত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে।’ ইতিমধ্যেই টুইটারে ট্রেনিং #ArrestLeenaManimekalai হ্যাশট্যাগ। লীনার দাবি, ‘এ থেকেই ভারতের বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যায়। ধর্মান্ধতা এবং ঘৃণার কালো গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে দেশটা। এরা যে শুধু আমার শৈল্পিক স্বাধীনতার পিছনে পড়েছে, তাই নয়, আমার শিক্ষাগত স্বাধীনতাতেও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।’