এবার দেশীয় রাজনীতিতে বংশপরম্পরা বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বভারতীয় একটি মিডিয়া গোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মমতা। সেখানে তিনি সঞ্চালকের করা এক প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, “ক্রিকেট সম্পর্কে জ্ঞান নেই এমন কেউ যদি ভারতের বৃহত্তম ক্রিকেট সংস্থার নেতৃত্ব দিতে পারে, তবে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কেউ যদি একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেন তবে ক্ষতি কী?” উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র ছেলে জয় শাহ বিসিসিআই-র সেক্রেটারির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ২০১৯ সাল থেকে। সেদিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন মমতা। এদিনের অনুষ্ঠানে তাঁকে নানান বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই সেগুলির জবাব দেন। এই অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকার করেছেন যে বিরোধীরা বর্তমানে বিভক্ত। তিনি বলেন, “২০২৪ সালের নির্বাচনের আর মাত্র ১৮ মাস বাকি, এই নির্বাচনে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই না করলে জনগণ আমাদের ক্ষমা করবে না।”
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু যখন কলকাতা সফর করবেন, তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা নেই, কিন্তু তাঁর দল তাঁকে সমর্থন করবে না। এরই সঙ্গে দ্রৌপদী মুর্মুর উপজাতি পরিচয়টাকেই কেবল হাইলাইট করার জন্য তৃণমূল নেত্রী বিজেপির নিন্দা করেছেন। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস ‘ভোট কাটুয়া’ বলে তৃণমূল কংগ্রেসকে মাঝেমধ্যেই আক্রমণ করে। এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি এবং তাঁর দল কী করবে, তা নিয়ে কংগ্রেস নির্দেশ দিতে পারে না। কংগ্রেস বিজেপিকে সমূলে উৎখাত করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেই কারণেই বেড়ে চলেছে বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই। তাঁর দল বাংলার ৪২টি আসনে লড়বে, কোনও দলের সঙ্গে জোট হবে না। এমনই জানিয়েছেন মমতা।
এর পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমো প্রশ্ন তোলেন, তিস্তা শেতলওয়াড় এবং মহম্মদ জুবায়ের গ্রেফতার হলে নুপূর শর্মাকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপির কারণে বিশ্বব্যাপী ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, এটা তাঁকে পীড়া দেয়। এছাড়াও তিনি বলেন, যে প্রাক্তন বিজেপি নেতারা কোনও রাজনৈতিক চাপের কারণে নয়, খুশি হয়েই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, কেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির নাম প্রধানমন্ত্রীর নামে রাখা হয়, যখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রকল্পের তহবিলের ৪০% রাজ্য সরকার দেয়? পাশাপাশি অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়েও মোদী সরকারের নিন্দা করেছেন তিনি। গৌতম আদানিকে বাংলায় আমন্ত্রণ জানানোর প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজনীতি এবং শিল্পায়নকে মিশিয়ে ফেলা উচিত নয়। “আমি সব শিল্পপতিদের পক্ষে। বিজেপির মতো কোনও এক বা দু’জনের পক্ষে নই”, পরিষ্কার জানিয়ে দেন মমতা।