আশার আলো বাংলার শিল্পমহলে। কোভিডের প্রকাপ কাটিয়ে চলতি বছরের এপ্রিলে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসেছিল রাজ্যে। বিশিষ্ট শিল্পপতিদের মতে, বাংলাই এখন লগ্নীর সেরা ঠিকানা। চলতি বছর বিজিবিএস-এ বাংলার জন্য ৩.৪২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে ১৩৭টি মউ চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। এবার বিশ্বজুড়ে রপ্তানি বাণিজ্যের নিরিখেও শীর্ষ স্থান দখলের সংকল্পে এগোচ্ছে বাংলা। নিত্য-নতুন ক্ষেত্রে নতুন নতুন শিল্পের জন্য রাজ্যকে স্বনির্ভর করে তোলার বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রপ্তানি বাণিজ্যের নিরিখে রাজ্যকে এগিয়ে জন্য বিষয়কে অগ্রাধিকার হিসেবে রেখে ২০২৩ সালের বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজন করা হবে বলেই জানাচ্ছে সূত্র। এই মর্মে শনিবার ২ জুলাই বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে এক দফা বৈঠক সেরে ফেলেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বিগত বাণিজ্য সম্মেলনের বিনিয়োগ প্রস্তাবকে বাস্তবায়িত করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন তিনি। সৃজনশীল ও সিনেমা সম্পর্কিত শিল্প এবং নলেজ ও ইনোভেশন ইকনমিকে প্রাধান্য দিয়েই নতুন দু’টি সেক্টর কমিটি গড়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুখ্যসচিব ও বিভিন্ন শিল্পপতিদের নিয়ে আগেই আটটি সেক্টর কমিটি তৈরি করেছিল রাজ্য। শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারীদের চাহিদার বিষয়ে নজর রাখা ছিল কমিটিগুলোর দায়িত্ব। বিনিয়োগ আনার বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সৃজনশীল ও সিনেমার সম্পর্কিত শিল্প বিষয়ক বৃহৎ আকারে এক সভার আয়োজন করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। ভারী শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, পর্যটন, প্রাণীসম্পদ বিকাশসহ একাধিক দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং বণিকসভার সদস্যদের নিয়ে মূলত তিনটি স্তরে বৈঠক আয়োজন করেছিল রাজ্য। মাঝারি, ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পের বিনিয়োগকারীরাও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলায় যে অজস্র নতুন সংস্থা এসেছে, বণিকসভার সদস্য এবং বিনিয়োগকারীরা সেসব তুলে ধরেন ওই বৈঠকে। গড়ে ওঠা নতুন নতুন ইউনিটগুলির একটি বিস্তারিত তালিকাও রাজ্য তৈরি করবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, আগামী বছরে ফেব্রুয়ারি মাসের ১, ২ ও ৩ তারিখে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসতে চলেছে রাজ্যে। যদিও সারা বছর যাবৎ প্রস্তাবিত বিনিয়োগের বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, স্টিল, সামুদ্রিক পণ্যের রপ্তানিতে জোর দিচ্ছে বাংলা। আগামী ৯ই জুলাই নবান্নে কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক হবে বলেও জানা গিয়েছে হয়েছে।নতুন শিল্প আনতে প্রতিটি দফতরকে কী কী করতে হবে, তা নিয়ে ২ তারিখের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করছে রাজনীতির কারবারিরা।