একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকেই বাংলায় কার্যত বিজেপির দুর্দশার সূত্রপাত। একের পর এক ভোটে শোচনীয় হার, নেতাদের দলত্যাগ, আদি-নব্য কোন্দল, সাংগঠনিক দুবর্লতায় জর্জরিত পদ্মশিবির। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলার বিজেপি নেতৃত্বের পর ক্রমশ আস্থা হারাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজভবন নির্ভর হয়েই চলছেন রাজ্য নেতারা। তাতেই ক্ষুব্ধ দিল্লীর নেতারা। শুধু তাই নয়, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে বারংবার নিজেদের মুখ লুকোতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপিকে। প্রসঙ্গত, এই কারণে কথায় কথায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ ও ৩৫৬-র দাবি ছেড়ে আত্মনির্ভর হওয়ার বার্তাও সম্প্রতি কলকাতা সফরে এসে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের দিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরও চিত্রটা রয়েছে একই।
উল্লেখ্য, সদ্য পুর এলাকার ছ’টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে বিজেপি। দার্জিলিংয়ের জিটিএ থেকে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট। দার্জিলিং-কার্শিয়াং, শিলিগুড়ি, নকশালবাড়ি ও মাটিগাড়ার মতো একদা পদ্মপ্রাধানের জোনে কার্যত ধূলিসাৎ পদ্ম। আবার দক্ষিণবঙ্গে ছ’টি পুরসভার ছ’টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানও ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। দমদম, দক্ষিণ দমদম, পানিহাটি, ভাটপাড়া ও চন্দননগর ও ঝালদার ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হয়। চন্দননগরে ফের জয়ী হয়েছে সিপিএম। ঝালদা দখলে রেখেছে কংগ্রেস। আর বাকি চারটি পুর এলাকার চার ওয়ার্ডই দখল করেছেন তৃণমূল। স্বভাবতই দলের এই হতশ্রী ফলাফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজভবন নির্ভরতা বন্ধ করে বাংলায় দলকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে কী করণীয় সেই প্রশ্নের জবাব চান অমিত শাহ-জে পি নাড্ডারা। তাই সুকান্ত-শুভেন্দুদের আগামী শনিবার থেকে শুরু হওয়া হায়দ্রাবাদে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দলের শোচনীয় অবস্থা নিয়ে জবাবদিহি চেয়ে তলব করতে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।