দেশ থেকে বহু মানুষই পড়াশোনা বা কাজের সূত্রে বিদেশে পাড়ি দেন। এ ঘটনা নতুন নয়। তারপর সেখানে বিদেশি আবহাওয়ায় আস্তে আস্তে ধাতস্থ হয়ে যান। কিন্তু তার বিভিন্ন কারণে সমস্যাও পড়তে বাঙালিদের। তবে আর চিন্তা নেই। মুশকিল আসান করতে আছে প্রবাসী বাঙালির পাশে ‘কলকাতা ডেজ।’ যেমন, বাদল কুমার ঘোষ ছিলেন সেনাবাহিনীতে। ছেলে চাকরি করেন কানাডাতে। অবসরের পর সেখানে গিয়ে বাদলবাবু নাজেহাল। সব কিছুই তো অন্যরকম। তবে ছেলে থাকায় তিনি না হয় সামলে নিতে পেরেছেন। কিন্তু যাঁরা নতুন আসবেন তাঁরাও একই সমস্যায় পড়বেন। তাই তাঁদের কথা ভেবেই বাবার বুদ্ধিতে ব্যাংক অফিসার অরূপ ঘোষ খুললেন ‘কলকাতা ডেজ’। ‘আলপিন টু এলিফ্যান্ট, কানাডায় বাঙালির মুশকিল আসান মানেই ‘কলকাতা ডেজ’। নতুনদের থাকার জন্য বাড়ি খোঁজা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ছেলেমেয়ের স্কুল, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ডাক্তারবাবু…সব কাজে সমস্যা পড়া প্রবাসী বাঙালির পাশে ‘কলকাতা ডেজ’। ‘কলকাতা ডেজ’ মানে টেনশনলেস জনগণ। ‘কলকাতা ডেজ’ চালু ৩৬৫ দিন, ২৪ ঘণ্টা। কাউকে একা ভাবার সুযোগই দেন না ওই দলের সদস্যরা। বলতে বলতে চোখ চকচক করে ওঠে ‘কলকাতা ডেজ’-এর সদস্য অরূপ ঘোষ।
২০১৭ সালে পথচলা শুরু ‘কলকাতা ডেজ’-এর। শুরুর সময় ভাবাই যায়নি এত তাড়াতাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে ‘কলকাতা ডেজ’। তবে শুধু প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ-মহিলারাই নন। ছোটরাও ‘কলকাতা ডেজ’-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কেউ যাতে একাকীত্বে না ভোগে সে কারণে ‘কলকাতা ডেজ’-এর উদ্যোগে বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই থাকে। তাতে সবচেয়ে বেশি লাভ হয় টিনএজারদের। ছোটদের মধ্যে একটা আলাদা টান তৈরি হয়। আইটি কোম্পানিতে চাকরিরত ইন্দ্রজিৎ দত্তও প্রবাসী বাঙালি। তিনিও ‘কলকাতা ডেজ’-এর সদস্য। তাঁর কথায়, “বেশ কিছুদিন থাকার পর কেউ বাড়ি-গাড়ি কিনতে চান। কেউ বাবা, মাকে বিদেশে নিয়ে আসতে চান। তাঁদের ভিসা বা মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্সের কাজকর্ম করতে হয়। সেই সময় ‘কলকাতা ডেজ’ তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। ইন্দ্রজিৎ দত্তের মতো লালি ঘোষ, সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়ও ‘কলকাতা ডেজ’-এর একজন সেনাপতি। সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “লালিদি আমাদের ‘কলকাতা ডেজ’-এর প্রধান এক সেনাপতি। মাসছয়েক আগে আমার সঙ্গে এঁদের যোগাযোগ হয়েছে। মজার কথা কী জানেন, এঁরা নিজেরা নিজেদের ডাকেন জনগণ। এখন আমাদের ৮১৮ জন জনগণ আছেন।”