গত পাঁচ ঘণ্টায় নিজের গতিবেগ ঘণ্টায় আরও ৪ কিলোমিটার বাড়িয়ে নিয়েছে ‘অশনি’। সোমবার সকাল ১০টার বুলেটিন বলছে, পুরী থেকে ৬৮০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে অশনি। অন্ধ্র উপকূল অর্থাৎ বিশাখাপত্তনম থেকে তার দূরত্ব ৫৫০ কিলোমিটার।
মঙ্গলবার থেকে উড়িষ্যার দিকে ঘুরবে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র গতিপথ। সন্ধ্যা নাগাদ পৌঁছে যাবে উপকূলের খুব কাছেও। কিন্তু স্থলভাগে আছড়ে পড়বে কি? ‘অশনি’র গতিপথ নিয়ে সব প্রশ্নের জবাব দিল মৌসম ভবন। সোমবার সকালের একটি বুলেটিনে তারা বিস্তারিত জানিয়েছে, ঠিক কোন পথে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে চলেছে ঘূর্ণিঝড়।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর বরাবর এখন ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে ঝড়টি। আপাতত ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ উত্তর-পূর্বমুখী হলেও মৌসম ভবন জানিয়েছে মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তর-পশ্চিমে অর্থাৎ উড়িষ্যা উপকূলের দিকে মুখ ফেরাবে ‘অশনি’।
তা না হলে সেটি পরের দিন গভীর নিম্নচাপ হয়ে আরও উত্তর দিকে এগিয়ে আসতে পারে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। সেক্ষেত্রে কি গভীর নিম্নচাপ হয়ে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে প্রবেশ করবে ওই ঘূর্ণিঝড়? আপাতত তা খতিয়ে দেখছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
আন্দামানের কাছে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ প্রথমে ঘূর্ণিঝড়, তার পরে রবিবার বিকেলে আরও শক্তি বাড়িয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছিল। তবে মৌসম ভবন জানিয়েছে, উপকূলের কাছে পৌঁছনোর আগে শক্তিক্ষয়ও শুরু হবে ‘অশনি’র।
সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা সোমবার থেকেই। সোমবার সকালেও ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের গতি ছিল ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলেমিটার পর্যন্ত। তবে আবহবিদরা জানিয়েছেন, দুপুর থেকে ঝড়ের গতি কমবে।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঝড়ের কেন্দ্রের ঘূর্ণন গতি ঘণ্টায় ৯৫-১১৫ কিলোমিটারে নামবে। এ ভাবে প্রতি ছ’ঘণ্টায় ঝড়ের কেন্দ্রের গতিবেগ কমতে থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। তবে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত সেটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের পর্যায়েই থাকবে। তার পর সেটি পরিণত হবে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে। ঝড়ের গতি থাকবে ৭৫ থেকে ৯৫ কিলোমিটার।
মঙ্গলবার সারা দিন সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হয়েই থাকবে ‘অশনি’। বুধবার রাতে সেটি পরিণত হবে গভীর নিম্নচাপে। তবে ঘূর্ণিঝড় মঙ্গলবার আদৌ স্থলভাগে ঢুকবে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন আবহবিদেরা। তাঁদের অনুমান অনুযায়ী, যদি শেষপর্যন্ত ‘অশনি’ পুরীর উপকূল ছুঁয়ে ফেলে তবে সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হয়েই পুরী এবং ভুবনেশ্বরে প্রবেশ করার কথা সেটির।