প্রকাশ্যে এল কেন্দ্রীয় রিপোর্ট। যা অনুযায়ী, গত ৭ বছরে গোটা দেশে মাওবাদী হিংসার ঘটনা এবং তাদের বিস্তার তাৎপর্যপূর্ণভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই তথ্য জানা গিয়েছে সদ্য প্রকাশিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ২০২০-‘২১ সালের বার্ষিক রিপোর্টে। বাংলার ক্ষেত্রে ২০১৪ সাল থেকে বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, মাওবাদী হিংসার ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যা দুই’ই শূন্যে নেমে এসেছে। তবে এই রিপোর্টের তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২০ সালে ছত্তিশগড়, ঝড়খণ্ড, উড়িষ্যা, মহারাষ্ট্র, বিহারকে মাওবাদী হিংসায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বলে উল্লেখ করলেও বাংলার এই একটানা সাফল্য নিয়ে একটি শব্দও ব্যয় করেনি। যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উঠছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উড়িষ্যার মতো রাজ্যগুলি যেখানে মাওবাদী কার্যকলাপে অতিষ্ঠ, তখন বাংলার এই সাফল্য রীতিমতো ঈর্ষণীয়। অন্যান্য রাজ্যে মাওবাদী হিংসা ও প্রাণহানির ঘটনা কমলেও, তা এরাজ্যের মতো শূন্যে নেমে আসেনি। সেদিক থেকে বিচার করলে, নিঃসন্দেহে এই কৃতিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। মাওবাদী দমনে এরাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের এই রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্যের পরিচায়ক। জঙ্গলমহলকে অনেকটাই শান্তিপূর্ণ করে তুলতে সক্ষম তিনি।
পাশাপাশি, ওই রিপোর্টে পরিসংখ্যান দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের মে মাসে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই বছর বাংলার ৯২টি মাওবাদী হিংসার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। সেখানে সেই বছর প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডে ৫১৭টি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে এবং মারা গিয়েছেন ১৮২ জন। একই বছরে ছত্তিশগড়ে ৪৬৫টি মাওবাদী হিংসার ঘটনায় ২০৪ জন মারা গিয়েছেন। তবে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বদল এসেছে পরিস্থিতিতে। ২০১২ এবং ২০১৩ সালে এরাজ্যে হিংসার ঘটনা নেমে এসেছে যথাক্রমে ছয় এবং একে। এই তথ্যও ফুটে উঠেছে ওই রিপোর্টে। ২০১২ সাল থেকেই বাংলায় মাওবাদী হিংসায় মৃতের সংখ্যা শূন্যে নেমে গিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সালের ৩১শে মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের মাওবাদী হিংসা ও মৃত্যুর ঘটনা শূন্য। গোটা দেশের নিরিখে যা এক নজির।