নতুন আর্থিক বছরের প্রথম মাসেই সুখবর। এপ্রিল মাসে বাংলার জিএসটি আদায় হয়েছে ৫,৬৪৪ কোটি টাকা। মার্চের তুলনায় যা প্রায় ১২০০ কোটি টাকা বেশি। একমাসে এমন বিপুল বৃদ্ধি সাম্প্রতিককালে হয়নি। গোটা দেশেও মোট জিএসটি আদায়ের অঙ্ক এই প্রথম দেড় লক্ষ কোটি টাকার সীমানা ছাড়িয়ে গেল। গত মাসে এই খাতে আয় হয়েছে ১ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। দেশের অর্থনীতির জন্য তো বটেই, পাশাপাশি বাংলার বাণিজ্যিক ক্ষেত্র ও আর্থিক লেনদেনের এই ইতিবাচক সাফল্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই বিপুল জিএসটি বৃদ্ধি প্রমাণ করছে, করোনাকালের পর মূল্যবৃদ্ধির আগুন, পেট্রপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম সত্ত্বেও বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলার বাণিজ্য আবহ। বিশেষত বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মাসে এমন সাফল্য উৎসাহ দেবে রাজ্যের শিল্পমহলকে।
২০২২-২৩ আর্থিক বছরের প্রথম মাসেই এই জিএসটি আদায় আরও একটি কারণে উৎসাহব্যঞ্জক। অর্থনীতির অন্যতম মানদণ্ড জিএসটি আদায়ের নিরিখে ‘এলিট ক্লাবে’ পদার্পণ করেছে বঙ্গ। সাধারণত যে রাজ্যগুলিতে এক মাসে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি জিএসটি আদায় হয়ে থাকে, তাদের দেশের রাজস্ব সংগ্রহে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। ২০২১ সালের এপ্রিলে বাংলায় এই অঙ্ক ছিল ৫,২৩৬ কোটি টাকা। সেখানে গত মাসে পূর্ণ রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুর পাশাপাশি সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি জিএসটি আদায়ের গণ্ডি পেরিয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। কেন্দ্রশাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে একমাত্র দিল্লি রয়েছে এই তালিকায়।
গোটা দেশে গত মাসের জিএসটি সংগ্রহের অঙ্কটাও প্রায় আশাতীত। ২০১৭ সালে এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে এত বিপুল অঙ্কের আদায় হয়নি। গত মার্চ মাসে দেশজুড়ে জিএসটি খাতে আয় হয়েছিল ১ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালের এপ্রিলেও সংগৃহীত কর সেই অঙ্কে পৌঁছেছিল। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত এই ১ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকা ছিল জিএসটি আদায়ের ক্ষেত্রে রেকর্ড। এক মাসের মধ্যেই সেখান থেকে ১ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে যাওয়া অবশ্যই অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য এক বার্তা।