গত বছরের ২ মে ছিল রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ। সেদিন ভোটে জিতে তৃতীয়বারের জন্য বাংলায় ক্ষমতায় ফিরেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। বাংলা দেখিয়ে দিয়েছিল, সে নিজের মেয়েকেই চায়। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। দেখতে দেখতেই আজ আরেকটা ২ মে এসে উপস্থিত হয়েছে। অর্থাৎ খাতায় কলমে পুরো এক বছর। আর এই এক বছরে দু’শো পার করার দিবাস্বপ্ন দেখা বিজেপি ক্রমাগত জমি হারিয়েছে। পদ্মবন ভরেছে কাঁটায়। অন্য দিকে, তৃণমূলের বিজয়রথ এগিয়েই চলেছে। স্পষ্ট তৃতীয় শক্তি হয়ে উঠতে পারেনি কেউই। ভোট মিটতে না মিটতেই ভেঙেছে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট। একটা আসনে জিতলেও রাজ্য রাজনীতি থেকে হারিয়ে গিয়েছেন আব্বাস সিদ্দিকি। শূন্যের গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খাচ্ছে কংগ্রেস। আর ডুবতে ডুবতেও মৃদু অক্সিজেনের দৌলতে ভেসে থাকার মরিয়া লড়াইয়ে সিপিএম। রাজ্য রাজনীতির শেষ এক বছরের সারাংশ এটুকুই।
তবে ঘটনা পরম্পরার বিচারে এই একটা বছর অনেক কিছুর সাক্ষী। একের পর এক নির্বাচন, উপনির্বাচন, দলবদল, অঘটনে ভরা ৩৬৫ দিন। এ কথা বলাই যায় যে এই একটা বছরে বারো মাসে তেরো পার্বণের মতো এসেছে নির্বাচন আর আদালতের নির্দেশ। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে একের পর এক তরঙ্গ খেলে গিয়েছে। যে ঢেউ এখনও প্রবহমান। এই একটা বছরে কংগ্রেসকে বাদ দিলে রাজ্যের বাকি তিন প্রধান রাজনৈতিক দলে সংগঠনেও এসেছে অনেক বদল। তৃণমূলের সংগঠনে গুরুত্ব বেড়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ হয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সিপিএমেও নতুন রাজ্য সম্পাদক হয়ে এসেছেন মহম্মদ সেলিম। আর বিজেপিতে রাজ্য সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষের জায়গায় এসেছেন সুকান্ত মজুমদার। সেই সঙ্গে রাজ্য থেকে জেলায় জেলায় বদলেছে দলের কমিটি। তা নিয়ে ক্ষোভ, বিক্ষোভে জর্জরিত গেরুয়া শিবির। বিদ্রোহ আর পদত্যাগের মিছিল চলছে।