বিগত মার্চ মাসের ২০ তারিখে শিলিগুড়ির একটি পাঁচতারা হোটেলে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে শহর। ধর্ষণের আগে সেই নাবালিকাকে হোটেলের পাবে জোরপূর্বক মদ্যপানও করানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত অসমের বাসিন্দা সাগর ছেত্রী। ঘটনার পর নিজের রাজ্যেই গা ঢাকা দেয় অভিযুক্ত। এ রাজ্যের পুলিশের একটি দল ৩০ মার্চ অসমে অভিযুক্ত সাগর ছেত্রীকে ট্র্যাক করে এবং গ্রেফতার করে। কিন্তু অসমের একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসারের হস্তক্ষেপের কারণে তাকে শিলিগুড়িতে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয় সেই দল। অজানা কোনও কারণে ছেত্রীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তারা। অন্য একটি মামলায় গুজরাতের ভাদগাম বিধানসভা কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক জিগনেশ মেভানিকে ২০ এপ্রিল রাতে অসম পুলিশের একটি দল হেফাজতে নিতে পৌঁছে গেছিল সুদূর গুজরাতে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এই যে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি টুইট লিখেছেন। রাতের অন্ধকারে মেভানিকে গ্রেফতার করে অসম নিয়ে আসে পুলিশ। সেই মামলায় জামিন পাওয়ার পর পৃথক আরেকটি মামলায় বিধায়ককে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়।
প্রসঙ্গত, অন্য দলের বিধায়ককে গ্রেফতার করতে যে পুলিশ এত সক্রিয়, ধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবকের গ্রেফতারিতে কেন বাধা দিল তারাই, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিযুক্ত সাগর ছেত্রী তার পারিবারিক রিয়েল এস্টেটের ব্যবসার কাজে গুয়াহাটি থেকে প্রায়ই শিলিগুড়ি যাতায়াত করে থাকেন। নির্যাতিতার সাথে ২০শে মার্চ শিলিগুড়ির একটি মলের পানশালায় দেখা করেন তিনি। পুলিশকে দেওয়া বয়ানে নির্যাতিতা জানান, সেখানেই অভিযুক্তের সাথে তার প্রথম সাক্ষাৎ। সেখান থেকেই এক অভিজাত হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার দুদিন পর ২২শে মার্চ প্রধাননগর থানায় এফআইআর দায়ের করেন নির্যাতিতা। পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারায় মালা রুজু করে পুলিশ। এরপরই অভিযুক্তকে খোঁজার কাজ শুরু করে পুলিশ। তারা জানতে পারে অসমের ধুবড়িতে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে সে। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করতে ৩০ মার্চ যায় পুলিশের একটি দল। তাকে গ্রেফতার করে ধুবড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, সেখানকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় রাজ্য পুলিশ। এই ঘটনায় অসম পুলিশকে যোগাযোগ করা হলে উত্তর পাওয়া যায়নি।