নেই বৃষ্টির দেখা। প্রবল গরমে নাজেহাল রাজ্যবাসী। বাংলার বিভিন্ন জেলার প্রায় ৭২টি ব্লকের জলস্তর নেমে গিয়েছে। তাই ওই সব এলাকায় পানীয় জলের পর্যাপ্ত জোগান বজায় রাখতে পানীয় জলের পাউচ বিলি করা হবে। সেই সঙ্গে জলের গাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। রাজ্য সরকারের তরফে কাজটি করবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। সম্প্রতি এক সরকারি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, জলস্তর নেমে যাওয়ার নিরিখে বাংলার ৩৪৩টি ব্লকের মধ্যে ৪২টি ব্লকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৩০টি ব্লককে অংশত আশঙ্কাজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাজ্য।
প্রসঙ্গত, এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। ওই জেলার চারটি ব্লককে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আরও ১৩টি ব্লককে অংশত আশঙ্কাজনক বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরেই রয়েছে পাশের জেলা নদিয়ার স্থান। সেখানে আশঙ্কাজনক ব্লকের সংখ্যা ৮টি, অংশত আশঙ্কাজনক ব্লকের সংখ্যা ৩টি। পূর্ব বর্ধমান জেলার পাঁচটি ব্লককে আশঙ্কাজনক ও অংশত আশঙ্কাজনক বলা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার ২টি ব্লককে আশঙ্কাজনক ও তিনটি ব্লককে অংশত আশঙ্কাজনক বলা হয়েছে। হুগলির আশঙ্কাজনক ব্লকের সংখ্যা ৬টি ও অংশত আশঙ্কাজনক ব্লকের সংখ্যা ৩টি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আশঙ্কাজনক ব্লকের সংখ্যা ৪টি ও আংশিক আশঙ্কাজনক ব্লকের সংখ্যা ৫টি। হাওড়া জেলার একটি করে ব্লক আশঙ্কাজনক ও আংশিক আশঙ্কাজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর ও বীরভূম জেলার ৫টি ব্লক ও ৪টি ব্লককে আংশিক আশঙ্কাজনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ক্রমাগত বৃষ্টির আকাল, তাপবাহের জোড়া আক্রমণে, এই ব্লকগুলিতে কার্যত পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে আলোচনা হয়েছে। তারপরেই ঠিক হয়েছে এই সমস্ত জেলা তথা ব্লকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জলের পাউচ ও গাড়ি পাঠানো হবে। জনস্বাস্থ্য করিগরি দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, “এ বছর গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিও প্রয়োজনের তুলনায় কম হচ্ছে। তাই আমরা ঠিক করেছি গ্রামীণ এলাকায় যেখানে পানীয় জলের অভাব রয়েছে, সেখানে জলের পাউচ ও গাড়ি পাঠিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দেব।” যে নয়টি জেলার জলস্তর কমেছে, তাতে নেই বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার একাংশ। অথচ প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে এই জেলাগুলিতেই জলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। সেই কারণে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে ওই তিন জেলার জন্যও আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। দফতর এক কর্তার কথায়, “বরাবরই আমরা দেখে আসছি গরমের সময় ওই জেলাগুলিতে কী পরিমাণ জলের অভাব থাকে। তাই যে সব ব্লকে জলস্তর নামার কথা জানা গিয়েছে সেখানে তো আমরা জল পাঠাবই। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিতে পানীয় জলের যোগান দিতে দফতর প্রস্তুত থাকবে।”