ভোটে গো হারান হেরেছে বিজেপি। কার্যত ধরাশায়ী হয়েছে একই গেরুয়া শিবির। তার উপরে দলের ভিতরের কোন্দলেরও শেষ নেই। এসবের মধ্যে অবিজেপি আবার বেশ কিছু রাজ্যে রাজ্য সরকার-রাজ্যপাল সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে।
তামিলনাড়ু, কেরলের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত মারাত্মক আকার নিয়েছিল। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কেন্দ্রের মোদী সরকারকে নিশানা করে দাবি করেছিল যে অবিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকারগুলির কাজে বাধা দিতে ও হেনস্থা করতেই কাজ করছেন রাজ্যপালরা।
অনেকে রাজ্যপাল পদের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এবার রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করার পথে একধাপ এগোল ডিএমকে নেতৃত্বাধীন তামিলনাড়ু সরকার। সোমবার তামিলনাড়ু বিধানসভায় একটি বিল পেশ করা হয়েছে।
সেই বিলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করার যে ক্ষমতা রাজ্যপালের হাতে ছিল, তা কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের রাজ্যপাল আর এন রবি রাজ্য, কেন্দ্রীয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে উটিতে দু’দিনের সম্মেলন করছেন, ঠিক সেই সময়ে তামিলনাড়ু সরকারের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, গত বছর ডিসেম্বরে মহারাষ্ট্রের উদ্ধভ ঠাকরে নেতৃত্বধানী জোট সরকারও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সম্প্রতি বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, হতে পারে মমতা সরকারও আগামী দিনে একই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে পারে।
এই আইন সংশোধনের পক্ষে মুখ খুলে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম. কে স্ট্যালিন জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের সীমতি ক্ষমতা ছিল, ফলে উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রভাব পড়ছিল, সেই কারণে আইন সংশোধনের কথা ভেবেছে সরকার। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটের প্রসঙ্গও তোলেন স্ট্যালিন।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাটে রাজ্য সরকার সার্চ কমিটির বেছে দেওয়া ৩ টি নামের মধ্যে ১ জনকে বেছে নিয়ে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করে।” এআইএডিএমকে ও বিজেপির মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। এই আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রথা অনুযায়ী সরকারের পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল।
কিন্তু বিগত ৪ বছরে নতুন প্রবনতা দেখা দিয়েছে, রাজ্যপালরা এমন আচরণ করছেন, যে এটা তাদের অধিকার ও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।” স্ট্যালিনের মতে নির্বাচিত সরকারকে ‘অসম্মান’ করার জন্য এই ধরনের কাজ করা হয়ে থাকে। স্ট্যালিন জানিয়েছেন, তেলাঙ্গানা, কর্নাটক এবং অন্ধ্র প্রদেশেও এই পদ্ধতি মেনে চলা হয়।