এবার উত্তর বাংলার কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নেও বিশেষ নজর দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নেওয়া হচ্ছে নিত্যনতুন উদ্যোগ। উত্তরবঙ্গে হিমঘর তৈরি থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সব দিকেই জোর দিচ্ছে রাজ্য। বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই এই মর্মে বেশ কয়েকটি মউ চুক্তিও স্বাক্ষরিত হল। প্রতিক্ষেত্রেই প্রান্তিক এলাকাগুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজ্যের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের কর্মসংস্থানেও বিশেষ নজর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরে বিনিয়োগের জন্য শিল্পপতিদেরও আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান প্রদীপ পুরোহিত বলেন, “রাজ্যের ক্ষেত্রে ১৩৭ টি মউ চুক্তি হয়েছে। অধিকাংশক্ষেত্রেই উত্তরবঙ্গ উপকৃত হবে।”
পাশাপাশি, শিল্প সম্মেলনে একাধিক ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জায়গাকে নির্বাচন করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রাধান্য পেয়েছে উত্তরের একাধিক প্রান্তিক এলাকা। সেই সব অঞ্চলে রাজ্যের তরফে নানা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের কৃষকদের জন্য তৈরি হচ্ছে একাধিক হিমঘর, যার চুক্তি গতকাল সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। মালদহে তিনটি, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর এবং ফালাকাটার জন্য একটি করে হিমঘর গড়ার জন্য চুক্তি করা হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং কোচবিহারে হিমঘর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ম্যাঙ্গো প্রসেসিং সেন্টারের বিষয়তেও চুক্তি করা হয়েছে। এগুলো তৈরি হবে গাজোল, মালদহ এবং হরিশচন্দ্রপুর ইত্যাদি এলাকায়, বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রস্তাব জমা পড়েছে। মালদহের বিশিষ্ট শিল্পপতি উত্তম সাহা বলেন, “এদিন যে চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন হলে কৃষিক্ষেত্রের সমস্যা মিটবে। অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।”
এপ্রসঙ্গে সিআইআইয়ের জোনাল সদস্য মান্না চৌধুরী বলেন, “কৃষিক্ষেত্রে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি ছিল। প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে সরকার যথাসময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” শুধু কৃষিক্ষেত্রে নয়, কর্মসংস্থান এবং স্বাস্থ্যেক্ষেত্রেও একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দার্জিলিংসহ উত্তরবঙ্গে পাঁচটি বেসরকারি নার্সিং কলেজ তৈরির বিষয়ে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। একটি প্যারামেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। উত্তরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির জন্য শিল্পপতিদের আহ্বান জানিয়েছে রাজ্য। সিআইআইয়ের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জিৎ সাহা বলেন, “উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিয়েছে সরকার।” স্পষ্টতই, বোঝা যায় সরকারের এহেন উদ্যোগে সকলেই সন্তুষ্ট।