গোটা দেশের ৫ কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল গেরুয়া শিবিরকে ভয়ঙ্কর ধাক্কা দিল। বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়াতেই পারল না পদ্ম শিবির। এমন দুর্বিষহ অবস্থা হবে বিজেপির, এতটা ভাবা যায়নি। যদিও বালিগঞ্জের নির্বাচনী ময়দান বিজেপির জন্য কোনওদিনই খুব একটা মসৃণ ছিল না।
সে কথা বিজেপির অনেক নেতা-নেত্রীই স্বীকার করে নেন। কিন্তু তাই বলে এমন ভরাডুবি? বালিগঞ্জে জমানত জব্দ হয়েছে বিজেপির। ভোট পেতে হত ১৬ হাজারের কিছু বেশি। কিন্তু বিজেপির চাকা সেই পর্যন্তও গড়াতে পারল না বালিগঞ্জে। এবারের উপনির্বাচনে ১৩ হাজার ১৭৪ টি ভোট পেয়েছে বিজেপি।
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যদিও সাংগঠনিক ব্যর্থতার ইস্যুটিকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তিনি বলেন, “বালিগঞ্জে আমরা লড়াইয়ে নেই। সেখানে ৪০ শতাংশের উপরে সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছেন।” কিন্তু প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, দলের সাংগঠনিক জোর না থাকলে, এই ধরনের নির্বাচনে লড়াইটা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একাধিক ইস্যু বিজেপি নেতৃত্ব পেয়েছেন, কিন্তু সেটিকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারেননি।
পরিস্থিতি যে এতটাই খারাপ হয়ে উঠতে পারে, তা হয়ত সাত-আট মাস আগেও কল্পনা করতে পারেননি অনেকে। কারণ, বিগত বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। সাধারণত যত পরিমাণ ভোট পড়ে, তার এক ষষ্ঠাংশ ভোট পেলে জমানত জব্দ এড়ানো যায়। সেই অনুযায়ী, বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষকে ভোট পেতে হত ১৬ হাজারের কিছু বেশি। কিন্তু তিনি পেয়েছেন ১৩ হাজারের কিছু বেশি ভোট।
উল্লেখ্য, এর আগের বিধানসভা নির্বাচনের সময় যখন এই কেন্দ্র থেকে সুব্রত মুখোপাধ্যায় জিতেছিলেন, তখন বিজেপি প্রার্থী ছিলেন লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় ভোট পেয়েছিলেন ২০ শতাংশ। এবার সেই ভোটের পরিমাণ কমে এসেছে ১২ শতাংশে। বালিগঞ্জের মতো এলাকায় যেখানে শহুরে ভোটার রয়েছে, সেখানে বিজেপির ভোট শতাংশ কমে যাওয়া যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।