রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিরোধীদের দিকে ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দেয় কেন্দ্রের মোদী সরকার। এই অভিযোগ বরাবরের। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাঁসখালি ধর্ষণ মামলার তদন্ত সেই সিবিআইয়ের হাতেই দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের বক্তব্য, যে হেতু মূল অভিযুক্ত শাসক দলের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ছেলে, তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থেই সিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সিবিআই কি বাংলায় আদৌ সফল? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদক চুরি থেকে ছোট আঙারিয়া-কাণ্ড— অনেক তদন্তেরই শেষ দেখা যায়নি। আবার কেন্দ্রীয় এই তদন্ত এজেন্সি সম্পর্কে ভরসা উঠে গিয়েছে তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিকেরও। সিঙ্গুর স্টেশনের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করে দেওয়া বুড়োশান্তি মাঠের দোকানে বসে বুধবার সকালে মনোরঞ্জন বললেন, ‘তাপসী কোনও বিচার পায়নি। এরাও (পড়ুন হাঁসখালির পরিবার) পাবে না।’
প্রসঙ্গত, ২০০৭-এর ৮ ডিসেম্বর সিঙ্গুরের কারখানা সংলগ্ন মাঠে তাপসীর অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, সিপিএমের লোকজন তাপসীকে ধর্ষণ করে খুন করে দেয়। তারপর দেহ পুড়িয়ে দিয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন রাজ্যের বিরোধী নেত্রী। তাপসী কাণ্ড নিয়ে গোটা বাংলায় তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। তুলেছিলেন সিবিআই তদন্তের দাবি। শেষমেশ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে বাধ্য হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকার। সিবিআই গ্রেফতার করে স্থানীয় সিপিএম কর্মী দেবু মালিক ও তৎকালীন সিপিএমের সিঙ্গুর জোনাল সম্পাদক সুহৃদ দত্তকে। সেই সুহৃদ কার্যত শয্যাশায়ী। দেবুরও টিকি পাওয়া যায় না। তাপসীর বাবা বলেন, ‘১৫ বছর হয়ে গেল। কী করল সিবিআই? কিছু করতে পারল কি? আপনারাই বলুন না! আমি তো বিচার পেলাম না। মামলার নিষ্পত্তি হল কই?’