দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের বাজার ধরার জন্যে লড়াই চলছে জেফ বেজোস এবং মুকেশ আম্বানির মধ্যে। এ বার ক্রিকেট নিয়েও দুই কোটিপতির দ্বৈরথ দেখতে চলেছে বিশ্ব। সৌজন্যে আইপিএলের মিডিয়া স্বত্ত্ব। কোটিপতি লিগ সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে মরিয়া দুই শিল্পপতিই। ফলে দুই সংস্থার এই লড়াই আগামীদিনে মিডিয়া স্বত্ত্বের বাজারে নতুন ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। এই সপ্তাহেই আইপিএলের মিডিয়া স্বত্ত্বের নিলামের জন্য নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে বিসিসিআই। টিভি এবং মোবাইলে ম্যাচের স্ট্রিমিং দেখানোর স্বত্ত্ব এই প্রথম আলাদা আলাদা ভাবে বিক্রি হতে চলেছে। এই নিয়েই লড়াই হতে পারে বেজোসের অ্যামাজন সংস্থার প্রাইম ভিডিও এবং অম্বানীর রিলায়েন্সের। দুই সংস্থাই ই-বাণিজ্যের বাজার ধরতে মরিয়া। এ বারের নিলাম অনলাইনে হতে চলেছে।
এপ্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে জড়িত এক সংস্থার কর্তা বলেছেন, “এই নিলাম জিতলে শুধু বাণিজ্যিক কারণে লাভবান হওয়া যাবে তাই নয়, এটা দুই সংস্থার কাছে সম্মানেরও লড়াই। স্বত্ত্ব কেনার জন্য দুই সংস্থাই জান লড়িয়ে দেবে।” আগামী ১২ই জুন নিলাম হতে চলেছে। সেখানে মিডিয়া স্বত্ত্বের জন্য ৭ বিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ৫৩ হাজার ৪৭ কোটির কাছাকাছি দাম উঠতে পারে। স্বত্ত্ব কিনতে পারলে সেই সংস্থা ২০২৩ থেকে ২০২৭ পর্যন্ত আইপিএলের সমস্ত ম্যাচ দেখানোর সুযোগ পাওয়া যাবে। এই মুহূর্তে আমেরিকার জনপ্রিয় খেলা ন্যাশনাল ফুটবল লিগ অনলাইনে দেখায় অ্যামাজন। সেই স্বত্ত্ব তারা কিনেছে ৭,৫৭৭ কোটি টাকা দিয়ে। তাও আবার শুধু বৃহস্পতিবারের ম্যাচ দেখাতে। সপ্তাহান্তের ম্যাচ সেখানে নেই।
উল্লেখ্য, বহুদিন ধরেই ভারতের আমজনতা ক্রমশ মোবাইলে খেলা দেখায় আগ্রহী। আগামীদিনে এই সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে। ফলে ম্যাচ লাইভ স্ট্রিমিং করার মাধ্যমে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের কাছে আরও দ্রুত পৌঁছনো যাবে। এক বার স্বত্ত্ব কিনে নেওয়া মানে বছরের ছয় সপ্তাহ একটানা দর্শক পাওয়া যাবে টানা পাঁচ বছর ধরে। আইপিএল ভারতের যে কোনও খেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর্শক দেখেন। অ্যামাজন এবং রিলায়েন্স দুই সংস্থাই স্বত্ত্ব পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও তাদের প্রতিযোগীও রয়েছে। ওয়াল্ট ডিজনির মালিকানাধীন স্টার ইন্ডিয়া এবং তাদের অনলাইন অ্যাপ ডিজনি হটস্টার এই স্বত্ত্ব পাওয়ার জন্যে লড়বে। তাদের হাতেই এখনকার স্বত্ত্ব রয়েছে। এ ছাড়া দৌড়ে রয়েছে সোনি পিকচার্স এবং জি এন্টারটেনমেন্টও।