রাজ্যকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে একাধিকবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযোগ যে অমূলক নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের লিখিত জবাবেই এবার তা স্পষ্ট হয়ে গেল। তৃণমূলের লোকসভার সাংসদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বেশ্বর টুডু জানিয়েছেন, ডিভিসির জলাধারগুলি সংস্কারের জন্য কোনও টাকারই অনুমোদন করা হয়নি। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক ডিভিসি কর্তৃপক্ষের থেকেই এই জবাব পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বেশ্বর টুডু।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ফি বছর বন্যা পরিস্থিতি তৈরির পিছনে ডিভিসির সংস্কার না হওয়াকেই দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের তরফে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার ডিভিসির জলাধারগুলির সময়মত সংস্কার করে না। রাজ্যের দাবি, সংস্কার না হওয়ায় জলাধারগুলিতে পলি পড়ে নাব্যতা কমছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জেলাগুলি বন্যার কবলে পড়ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে রাজ্যের তরফে।
রাজ্য সরকার এনিয়ে বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করলেও কোনও ফল হয়নি। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ডিভিসির জলাধারগুলির সংস্কারের জন্য দরবার করা হলেও শুধুমাত্র মৌখিক আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি বলে অভিযোগ। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ডিভিসির জলাধার এবং বাঁধগুলি পরিচালনার জন্য গঠন করা হয়েছে দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটি। দামোদর বরাকর রিভার সিস্টেমের কাজ পরিচালনা, সময় মতো সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে পর্যালোচনার জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক। তবে জলাধারগুলির জলস্তর বৃদ্ধি করা এই কমিটির আওতাধীন নয় বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মোদী সরকারের জলশক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বেশ্বর টুডু আরও জানিয়েছেন, ২০১২ সালে নাব্যতা কমানোর কাজ শুরুর চিন্তাভাবনা করা হলেও, পলি ফেলার উপযুক্ত জায়গার অভাব এবং খরচ বৃদ্ধির জন্য তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। কেন্দ্রের এই জবাবের মধ্যেই প্রমাণ হয়েছে, রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যার জন্য যে কেন্দ্রের ডিভিসির সংস্কারে উদাসীনতাকে দায়ী করেন, তা অমূলক নয়।