দিন দিন আকাশ ছোঁয়া দাম বাড়ছে জ্বালানির। হেঁসেলের গ্যাসও। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের এমন মূল্যবৃদ্ধিতে দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে আম জনতার। এক লাফে ৫০ টাকা বেড়ে কলকাতায় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার পিছু দাম হয়েছে ৯৭৬ টাকা। হোটেল-রেস্তরাঁয় ব্যবহৃত রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার মার্চে ১০৮ টাকা বেড়ে ২০০০ পার করেছে।
কলকাতার সস্তা হোটেলগুলো সবথেকে সমস্যায়। ১৯ কেজির বাণিজ্যিক সিলিন্ডার ছুঁয়ে ফেলল ২০৯৫ টাকা। কেউ কেউ তা বুধবার কিনেছেন ২৩০০ টাকায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, গ্যাসের দাম না কমলে খাবারের দাম বাড়ানোর পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন।
শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরের চাউমিন, বিরিয়ানি বিক্রেতা অখিল প্রসাদ বললেন, ‘আমাদের বিরিয়ানির হান্ডির তলায় সবসময় ঢিমে আঁচ জ্বালিয়ে রাখতে হয়। প্রচুর গ্যাস লাগে। কম দামে খাবার পাওয়া যায় আমার দোকানে। দাম বাড়ালে খদ্দের আসবে না। কিন্তু আগের দামে আর বিক্রি করতে পারছি না। দাম একটু বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের কমিটির সঙ্গেও সবার কথা হয়েছে। ক্রেতাদের বোঝাবো।’
অনেক দোকানি আবার দাম বাড়ানোর পক্ষে নন। তাঁরা জানালেন, খাবারের দাম বাড়িয়ে দিলে খদ্দের কমবে। তাই তাঁরা খাবারের পরিমাণ কমানোর কথা ভাবছেন। কেউ আগে ৩০ টাকায় চারটে কচুরি, তরকারি পাওয়া যেত। ওই টাকায় এবার তিনটে কচুরি দেওয়া হবে। কমবে তরকারির পরিমাণও।
মৌলালির একটি তেলেভাজার দোকানি রবিন দেব বললেন, ‘একদম লাভের মুখ দেখছি না। জিনিসপত্র, গ্যাস, রান্নার তেল, সব কিছুরই দাম বাড়ছে। কিন্তু আমরা খাবারের দাম বাড়াতে পারছি না। আর কতদিন লোকসানে মাল বেচব? এরকম চলতে থাকলে দোকানে ঝাঁপ ফেলে দিতে হবে।’
গ্যাসের দাম বাড়ায় সমস্যায় শহরের বেশিরভাগ ফাস্ট ফুডের দোকানি। নিউমার্কেটের রাহুল গড়ের বক্তব্য, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই খাবারের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছি। কিন্তু বিক্রির কথা ভেবে তা করিনি। কিন্তু এবার না বাড়িয়ে উপায় নেই। আমাদের কমিটির সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
দূষণের কারণে চা, সাধারণ খাবার দোকানেও এখন গ্যাস ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। উৎসাহ দিতে কিছু দোকানিকে নিখরচায় গ্যাসের লাইন ও বার্নার দিয়েছে পুলিশ ও পর্ষদ। এখন গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধির ফলে তাদের মাথায় হাত পড়েছে।