ভারত-বেলারুশ ম্যাচের আগে ভারতীয় ফুটবলারদের কয়েকটি ছবি নেট মাধ্যমে দেওয়া হয় ভারতীয় ফুটবল দলের পক্ষ থেকে। যে ছবিগুলিতে খেলা শুরুর আগে ফুটবলারদের গা ঘামাতে দেখা যাচ্ছে। একটি ছবিতে তিন ফুটবলারকে প্রার্থনা করতে দেখা যাচ্ছে। সেই ছবিই এখন ভাইরাল।
ভারতীয় ফুটবলের এই ছবি অতুলপ্রসাদের লেখারই বাস্তব প্রতিচ্ছবি। দেশে যখন অসহিষ্ণুতার আবহ ক্রমশ বাড়ছে, বিভেদ-অবিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে অহরহ, সে সময় এই ছবির আলাদা গুরুত্ব আছে বৈকি।
খেলার মাঠ যেমন রেষারেষির, তেমনই মিলনেরও। নির্দিষ্ট সময়ের পর শেষ হয়ে যায় প্রতিদ্বন্ধিতা। খেলোয়াড়রা আবার সবাই মিলে এক লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েও পড়েন। এক রকম ভাবেন, এক সঙ্গে লড়াই করেন। জিতলে এক সঙ্গে আনন্দ করেন। আবার হারলে এক সঙ্গে বেদনাহত হন।
ফুটবলের এই ছবিই মনে করিয়ে দিচ্ছে টোকিয়ো অলিম্পিক্সে পুরুষদের ৪x৪০০ মিটার রিলে দলের কথা। এশিয় রেকর্ড করা ভারতীয় দলে ছিলেন মহম্মদ আনাস, নির্মল টম, অমোজ জ্যাকোব এবং আরোকিয়া রাজীব। সকলেই নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছিলেন দেশের জন্য।
এমন উদাহরণ কম নেই। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই তো ভারতের অন্যতম মূলধন। অন্যতম পরিচিতি। আন্তর্জাতিক স্তরে সেই পরিচিতি বার বার তুলে ধরে খেলার মাঠ। তুলে ধরেন খোলোয়াড়রা। ভারতীয় দলের ফুটবলারদের এই ছবি সে জন্যই আলাদা। মন ভাল করে দেওয়ার। এ দেশ বিদ্বেষের নয়, মিলনের মহা তীর্থ।
ফুটবলপ্রেমী থেকে সাধারণ মানুষের আলোচনায় উঠে আসছে তিন ফুটবলারের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে প্রার্থনার ছবি। ভারতীয় দলের তিন সদস্য হলেন হর্মিপাম রুইভা, মনবীর সিংহ এবং ভিপি সুহের। ভারতীয় ফুটবল দলের এই তিন সদস্য পৃথক পৃথক ধর্মে বিশ্বাসী। তাঁদের প্রার্থনার ধরণও তাই আলাদা।
খেলার মাঠে নামার আগে খেলোয়াড়দের প্রার্থনা করা নতুন বিষয় নয়। সকলেই দলের জন্য সেরা পারফরম্যান্স করতে চান। নিজেকে উজাড় করে দিতে চান। আরাধ্য ঈশ্বরের কাছে সেই শক্তির জন্য প্রার্থনা করেন। তবু রুইভা, মনবীর, সুহেরদের এই ছবিতে রয়েছে এক অন্য বার্তা।