ক্ষোভ উগরে দিলেন ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় ছাত্র হরজ্যোৎ সিং। বারবার যোগাযোগ করেছেন দূতাবাসে, কিন্তু সাহায্যের বদলে শুধু প্রশ্নবাণ উড়ে এসেছে, এমনই দাবি করেছেন তিনি। গত রবিবার গুলিবিদ্ধ হন এই ভারতীয় পড়ুয়া। হরজ্যোৎ জানিয়েছেন, “লিভে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার একটু সাহায্যের দরকার ছিল। আমি দূতাবাসে যোগাযোগ করলেও তাঁদের তরফ থেকে খালি প্রশ্ন করা হচ্ছিল। একই কথা অনেকবার করে বলতে হয়েছে।” কিয়েভের ভারতীয় দূতাবাস থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এই যুবক।
প্রসঙ্গত, কিয়েভ থেকে দেশে ফেরার জন্য রওনা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ট্রেনে তাঁকে উঠতে দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন হরজ্যোৎ। তাই বাধ্য হয়ে সড়কপথে গাড়ি করে কিয়েভ থেকে লিভের দিকে যাত্রা শুরু করেন। সেই গাড়ি লক্ষ্য করেই গুলি চালায় রুশ সেনা। গুলিবিদ্ধ হন এই ভারতীয় পড়ুয়া। তিনটি গুলি লাগে তাঁর শরীরে, ভেঙে যায় তাঁর পা। আহত হওয়ার পরে তিনি ভারতীয় দূতাবাসে আবার যোগাযোগ করেন। দূতাবাসকে জানান, “হাসপাতাল থেকে বেরনোর মতো অবস্থা ছিল আমার। একটু সাহায্য পেলেই আমি লিভে পৌঁছে যেতে পারতাম।” কিন্তু তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর আবেদনে সাড়া দেওয়া তো দূরঅস্ত, কোনও সঠিক দিশাই দেখাতে পারেনি ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস।
উল্লেখ্য, দিল্লীর বাসিন্দা হরজ্যোৎ নিজের ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, “আমার মতো আরও অনেক হরজ্যোৎ আটকে আছে কিয়েভে। তারা নিজের বাড়িতে আটকে পড়েছে, কী করা উচিত বুঝতে পারছে না। আমি অনেকবার দূতাবাসে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু দূতাবাসের লোকজন আমাদের আগেই কিয়েভ থেকে লিভের দিকে চলে গিয়েছে।” দূতাবাসের কর্তব্য বিপদে মানুষকে সাহায্য করা, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন হরজ্যোৎ। কেন্দ্রীয় সরকার ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না, ইতিমধ্যেই এমন আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে। যাঁরা দেশে ফিরে আসতে পেরেছেন, তাঁরাও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্ধার কাজের ধরণ নিয়ে। বিপদসঙ্কুল এলাকায় দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেককেই। হরজ্যোতের এই ঘটনা আবারও ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের দুর্দশার ছবি ফের একবার স্পষ্ট করে দিল।