এসেছে অভূতপূর্ব সাফল্য। দীর্ঘ ৪৩ বছরেল অধিকারী ‘গড়ে’ ভাঙন ধরিয়ে কাঁথি পুরসভার দখল নিয়েছে তৃণমূল। ২১ ওয়ার্ডের পুরসভায় মাত্র দুটি ওয়ার্ড পেয়েছে বিজেপি। তারপরই পুরসভার চেয়ারম্যান পদে কে বসবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। মনে করা হচ্ছিল, মন্ত্রী অখিল গিরির জয়ী পুত্র সুপ্রকাশ গিরিকেই সেই পদে আনা হবে। কিন্তু শুক্রবার সেই জল্পনায় ইতি পড়ল। কাঁথি পুরসভার সম্ভাব্য চেয়ারম্যান রিনা দাস। ভাইস চেয়ারম্যান হতে পারেন অখিলপুত্র সুপ্রকাশ গিরিকে। যদিও এখনও চূড়ান্ত সিলমোহর পড়েনি। এই নাম পরিবর্তন হতে পারে বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, রিনা দাস দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মী। ১৯৯৩ সালে কাঁথি কলেজে ছাত্র পরিষদ দিয়ে রাজনীতিতে হতে খড়ি। প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন প্রদেশ কমিটির সদস্য। ২০০৭ সালে রাজ্য মহিলা কংগ্রেসের সম্পাদক। কাঁথি পুরসভা ৯ নম্বর ওয়ার্ডে থেকে ২০০০সালে কংগ্রেসের প্রার্থী। ২০১০সালে কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল, ২০১৫ সালে নির্দল প্রার্থী। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। তাঁকে ভরসা করে পুরভোটের টিকিটও দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। দলের ভরসাও রাখলেন। শুভেন্দু অধিকারীদের দীর্ঘদিনের ‘গড়’ ভেঙেছেন। কাঁথি পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ড থেকে জিতেছেন। এমনকী অধিকারী বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ যে এলাকায়, সেই ১৫ নং ওয়ার্ডেও হেরেছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে রিনা দেবী যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। খুব সাদামাটা জীবন তাঁর। এখনও টালির একচালা বাড়িতে থাকেন, অবিবাহিত। এহেন ব্যক্তি কাঁথি পুরসভার দায়িত্ব নিলে আখেরে ভাল হবে বলেই মত স্থানীয়দের। আর অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশের কাজকর্মও প্রশংসিত এলাকায়। তিনি ভাইস চেয়ারম্যান হলে, উভয়ে মিলে কাঁথির পুরপরিষেবাকে আরও উন্নত করে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী স্থানীয় বাসিন্দারা। এতদিন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান পদে ছিলেন অধিকারী পরিবারের ছোট ছেলে সৌমেন্দু। এই পরিবারের প্রায় সকলক সদস্যই কোনও না কোনও সময়ে এই পুরসভার চেয়ারম্যান পদে বসেছেন। শিশির অধিকারী থেকে শুভেন্দু অধিকারী, সকলেই এই দায়িত্ব সামলেছেন। আর তাই অঘোষিত ‘অধিকারী গড়’ হয়ে উঠেছিল তা। ৪৩ বছর পর সেই গড় ভেঙে চুরমার হল। নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্বে এগিয়ে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেত্রী রিনা দাস।