শুধু তৃণমূলকে দোষারোপ করে নয়, বিজেপির গোড়ায় গলদে ঢুকতে চান লকেট চট্টোপাধ্যায়। ৫ মার্চ দলের চিন্তন বৈঠকেও থাকবেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম এই সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলির সাংসদ। ১০৮টি পুরসভার ভোটে পর্যদুস্ত হওয়ার পর শুধু সন্ত্রাসের তত্ত্ব আঁকড়ে হারের কারণকে দেখাতে চাইছে সুকান্ত শিবির। দলের নিচুতলার সংগঠনের ভেঙে পড়া অবস্থাকে আড়াল করতে চাইছে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। তখন কিন্তু তাদের এই সন্ত্রাসের যুক্তি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে কতটা খাটবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
১০৮টি পুরসভার ফলাফলে দলের পারফরম্যান্সে দিল্লির নেতারা রীতিমতো বিরক্ত। তাই কাল শনিবার রাজ্যের সহপর্যবেক্ষক অমিত মালব্য আসছেন চিন্তন বৈঠকে। পুরভোটে বিপর্যয়ের পিছনে কী কী কারণ রয়েছে তা খুঁজে বের করে বিস্তারিত রিপোর্ট মালব্যর থেকে নেবেন জেপি নাড্ডা-বি এল সন্তোষরা।
এর মধ্যেই অবশ্য বঙ্গ বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবির সক্রিয়। একুশে প্রধান বিরোধী হওয়ার পর একের পর এক নির্বাচনে দলের জনসমর্থন কেন কমছে, কোথায় কী কী গলদ রয়েছে তার বিস্তারিত দিল্লিকে পাঠাতে চলেছেন বিক্ষুব্ধ শিবিরের নেতারা। বৃহস্পতিবার বেশি রাতে কলকাতায় ফিরেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। আজ, শুক্রবার লকেটের সঙ্গে দলের বিদ্রোহী শিবিরের কয়েকজনের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি দলের ১২ জন বিধায়ক লকেটের সঙ্গে আলাদা করে যোগাযোগ রাখছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। রাজ্যে ১০৮টি পুরসভার ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পরই দলের কোন্দল সামনে এসে গিয়েছে।
জয়প্রকাশ মজুমদার থেকে রীতেশ তিওয়ারিরা সরব হয়েছেন অমিতাভ চক্রবর্তী ও তাঁর টিমের বিরুদ্ধে। অমিতাভর পদত্যাগের দাবিতে সরব বিদ্রোহীরা। একুশের বিধানসভা ভোটের পর একাধিক উপনির্বাচন ও পুরভোটে বার বার বিপর্যয়ের কারণ হিসাবে শুধু সন্ত্রাসের তত্ত্ব মানতে নারাজ দলের একটা বড় অংশই। এই পরিস্থিতিতে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ‘আত্মসমীক্ষা’ টুইটে আলোড়ন দলে। এই টুইট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বারবার দলের ‘স্টার’ বক্তার তালিকায় ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ভবানীপুরের ভোটে আসেননি। কলকাতার পুরভোটে আসেননি। এমনকী, শেষ ১০৮টি পুরসভার ভোটের প্রচারেও তিনি ছিলেন না। অবশ্য একটা বড় সময়ই তিনি উত্তরাখণ্ডে নির্বাচনের দায়িত্ব সামলেছেন। দিল্লীর নেতাদের সুনজরে রয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী স্নেহ করেন লকেটকে। অমিত শাহও পছন্দ করেন।