এবার সঠিক নজরদারির অভাবে ট্রেনে ক্রমশ বাড়ছে পাচ্ছে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করার প্রবণতা। এমনকী যেসব লাগেজ বুক করেই ট্রেনে ওঠানোর নিয়ম রয়েছে, অনেক সময় সেগুলির বুকিংই করাচ্ছেন না যাত্রীরা। সম্প্রতি এক আরটিআইয়ের জবাবে এই কথা বকলমে স্বীকার করে নিল রেল বোর্ড। রেলভবনের অন্দরের খবর, দেশজুড়ে স্বাভাবিক ট্রেন পরিষেবা শুরু হলেও, যাত্রীদের জন্য করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ পুরোপুরি ওঠেনি এখনও। স্টেশনের পিআরএস কাউন্টারগুলি খুলে দেওয়া হলেও, দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেসের টিকিট অনলাইনেই কাটছেন অধিকাংশ যাত্রী। এর প্রভাব হয়তো পড়েছে। শেষ মুহূর্তে অনলাইনে টিকিট বুকিং করতে না পেরে বা পিআরএস কাউন্টর থেকে টিকিট না পেয়ে বিনা টিকিটেই ট্রেনে উঠে পড়ছেন কেউ কেউ। যদিও এই ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করেনি রেল বোর্ড।
রেল বোর্ড বলেছে, “২০২১ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ কোটি ৭৮ লক্ষ ৭৯ হাজার যাত্রীকে পাকড়াও করা হয়েছে, যাঁদের কাছে হয় টিকিট ছিল না অথবা বেআইনি টিকিট ছিল কিংবা লাগেজ বুকিং করানো ছিল না। জরিমানা বাবদ তাঁদের কাছ থেকে সবমিলিয়ে ১ হাজার ১৭ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে।” এতসংখ্যক বিনা টিকিটের যাত্রীকে পাকড়াও এবং জরিমানা বাবদ বিপুল অর্থ আদায়ের তথ্যকে ঢাল করে নজরদারিতে অভাবের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে রেল। কিন্তু এত যাত্রী কীভাবে ট্রেনে উঠে পড়লেন কিংবা কত যাত্রী এভাবে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেছেন, তা নিয়ে নিশ্চুপ রেল। আরটিআইতে এর উত্তর দেওয়া হয়নি, পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে মন্ত্রক সূত্রের খবর, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ন’মাসে টিকিটহীন যাত্রী পাকড়াওয়ের সংখ্যা লক্ষ্যণীয়ভাবে বেশি। সংশ্লিষ্ট আরটিআইয়ের জবাবেই রেল বোর্ড জানিয়েছে, “২০২১ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ট্রেনে সার্বিক অকুপেন্সির হার ছিল ৯৯.৬৫ শতাংশ।” অর্থাৎ, দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত শ্রেণিতে খালি আসন প্রায় ছিলই না। ফলে বিনা টিকিটে ভ্রমণ নিয়ে রেল বোর্ড সূত্রের ব্যাখ্যাই কার্যত প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।