এবার উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরের খেরিতে প্রতিবাদী কৃষকদের গাড়ি দিয়ে পিষে মারার মামলার মাস্টারমাইন্ড আশিস মিশ্রের জামিনে মুক্তির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালেন নিহতদের পরিবারের সদস্যেরা। আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানিয়েছেন, আশিসের জামিনে মুক্তির বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ সরকার কোনও আইনি পদক্ষেপ না করায় নিহত কৃষকদের পরিজনেরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। গত ১০ই ফেব্রুয়ারি ইলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনৌ বেঞ্চ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিসের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল। তবে অন্য ধারাগুলিতে জামিন মিললেও আদালতের আদেশে খুন ও ষড়যন্ত্রের ধারাগুলির উল্লেখ ছিল না। ফলে জামিন মেলার পরেও কয়েকদিন জেলেই কাটাতে হয় মন্ত্রী-পুত্রকে। সেই জটিলতা কাটাতে ফের হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন আশিস। আদালত সেই রায় সংশোধন করে দেওয়ার পর জেল থেকে বার ১৬ই ফেব্রুয়ারি লখিমপুর খেরি জেলে থাকে ছাড়া হয় তাঁকে।
উল্লেখ্য, ২০২১-এর ৩রা অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে আশিসের গাড়ির তলায় চাপা পড়ে কৃষি আইন বিরোধী বিক্ষোভকারী চার কৃষক এবং এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরবর্তী হিংসায় আরও চার জনের প্রাণ যায়। যদিও অজয়ের দাবি, ঘটনার সময় ওই গাড়িতে ছিলেন না আশিস। ওই ঘটনায় আশিস এবং তাঁর সঙ্গী অঙ্কিতের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোরও অভিযোগ ওঠে। গত ৯ই অক্টোবর আশিসকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তার কয়েক দিন পরেই উদ্ধার করা হয় তাঁর বন্দুক। লখিমপুর-কাণ্ডের তদন্তে ঢিলেমির জন্য গত ২০শে অক্টোবর উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে তুলোধনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ প্রশ্ন তুলেছিল, সে দিন কয়েক হাজার কৃষকের জমায়েতে ওই ঘটনা ঘটলেও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কেন মাত্র ২৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সন্ধান পেয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ব্রাহ্মণ ভোট পাওয়ার লক্ষ্যেই অজয়ের ছেলের মুক্তির ব্যবস্থা করেছে সে রাজ্যের বিজেপিশাসিত সরকার।