এবার যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আঘাত হানার অভিযোগ তুলে এনে বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হল কংগ্রেস, ডিএমকে, বামেরা-সহ দশটি বিরোধী রাজনৈতিক দল। বাংলা-সহ অ-বিজেপি দল শাসিত রাজ্যগুলিতে সরকারের কাজে সংশ্লিষ্ট রাজ্যপালের নিরন্তর হস্তক্ষেপ রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক কাজে বাধা দেওয়া এবং আইএএস ক্যাডার রুলের সংশোধন নিয়ে কেন্দ্রের একতরফা সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে একটি স্মারকলিপি সম্মিলিত ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। সেই স্মারকলিপি সই করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, বাম, ডিএমকে, শিবসনা, টিআরএস, আরজেডি-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের রাজ্যসভার সাংসদেরা।
পাশাপাশি, স্মারকলিপিতে সই করেছেন ২৮ জন আইএএস এবং আইএফএস অফিসার। আজ বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায়, জহর সরকার, ডিএমকে-র তিরুচি শিবা, কংগ্রেসের কুমার কেতকর, সিপিআইয়ের বিনয় বিশ্বমের মতো নেতারা। ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত দেব মুখোপাধ্যায়ও। সৌগতবাবু আইএএস ক্যাডার রুলের সংশোধন নিয়ে তাঁর প্রশ্ন এবং জবাবটি তুলে ধরেন। তিনি পার্সোনেল মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কেন্দ্র ওই রুলের কোনও সংশোধন করতে চাইছে কি না। আর তা করলে রাজ্য সরকারগুলির তরফে কোনও আপত্তি তোলা হয়েছিল কি না। উত্তরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সংখ্যায় আইএএস অফিসারকে কেন্দ্রের ডেপুটেশনে পাঠানোর কথা রাজ্যগুলির। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা করা হচ্ছে না। ফলে কেন্দ্রের অফিসারের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকছে।
এপ্রসঙ্গে বিরোধীদের মতে, আজ না হোক কাল, কেন্দ্র এই রুলের সংশোধন করবে। এর আগে বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, সেই সময়ে কেন্দ্রের আর একটি চিঠি পৌঁছয় রাজ্যের হাতে। সূত্রের খবর, সেই চিঠিতে বলা হয়েছিল, কোনও অফিসারকে কেন্দ্র কোনও পদে বদলি করলে এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তিনি সেখানে যোগদান না করলে, সংশ্লিষ্ট অফিসারকে ‘স্ট্যান্ড রিলিভড’ বলে গণ্য করা হবে। প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, এর অর্থ, ওই অফিসে ‘স্ট্যান্ড রিলিভড’ হওয়ার পরে তাঁর বেতন বন্ধ হবে এবং পেনশন পেতে সমস্যা হবে। অন্য দিকে, বাংলার রাজ্যপালকে অপসারণের দাবিতে চলতি অধিবেশনের গোড়া থেকেই রাজধানীতে সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস। পরে তাদের সঙ্গে গলা মেলায় ডিএমকে। আজ তৃণমূল, ডিএমকে, কংগ্রেস একযোগে তামিলনাড়ু, বাংলা, কংগ্রেস, কেরলে রাজ্যের কাজে রাজ্যপালের বিষয়টি বিশদে রেখেছে স্মারকলিপিতে। তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “আমরা বিষয়গুলি নিয়ে সংসদের ভিতরে ও বাইরে লড়াই করব।”